গ্রেটা থুনবার্গসহ গাজামুখী নৌবহরের অনেকে আটক
প্রকাশ : ০২-১০-২০২৫ ১০:২৬

ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে ত্রাণ নিয়ে যাত্রা করা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহরে হস্তক্ষেপ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। নৌবহরটি অন্তত আটটি নৌকা থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে বেশ কয়েকজন অধিকারকর্মীকে আটক করেছে ইসরায়েলি সেনারা। তাদের মধ্যে সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও রয়েছেন।
বুধবার (১ অক্টোবর) রাতে ভূমধ্যসাগরে গাজা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে ওই নৌযানগুলোয় ঢুকে পড়েন ইসরায়েলি সেনারা। সেগুলো থেকে আটক অধিকারকর্মীদের এখন ইসরায়েলের আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবে ‘ইয়ম কিপুর’ উপলক্ষে ছুটি থাকায় ইসরায়েলের প্রায় সব ধরনের সরকারি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
গাজামুখী নৌযানে ইসরায়েলের হস্তক্ষেপের খবর প্রথমে জানানো হয় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার পক্ষ থেকে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বহরের যে আটটি নৌযানে ইসরায়েলের হস্তক্ষেপের খবর পাওয়া গেছে সেগুলো হলো— দেইর ইয়াসিন, হিউগা, স্পেক্টার, আদারা, আলমা, সিরিয়াস, আরোরা ও গ্রান্ডি ব্লু।
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘হামাস–সুমুদ ফ্লোটিলার কয়েকটি নৌযান নিরাপদভাবে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেগুলোর আরোহীদের ইসরায়েলের একটি বন্দরে নেওয়া হচ্ছে। গ্রেটা ও তার বন্ধুরা নিরাপদ ও সুস্থ আছেন।
মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে থুনবার্গকে নৌযান থেকে সরিয়ে নিতে দেখা যায়।
এই নৌবহরের ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলে শুরু থেকেই দাবি করে আসছে ইসরায়েল। তবে এর পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি তারা।
নৌযানের আরোহীদের আটকের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। আন্তর্জাতিক জলসীমায় তাদের ওপর ইসরায়েলের হস্তক্ষেপের বিষয়ে এক্সে এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ন্যায়ের পক্ষে কথা বলা মানুষদের অপহরণ করা হয়েছে। ফ্লোটিলা কোনো আইন ভাঙেনি। যেটি অবৈধ, তা হলো ইসরায়েলের জাতিগত নিধন, অবৈধ গাজা অবরোধ এবং অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে বিগত প্রায় দুই বছরে সেখানে ৬৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হত্যাযজ্ঞের পাশাপাশি গাজা অবরোধ করে উপত্যকাটিতে তীব্র খাদ্য সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। এতে অনাহার–অর্ধাহারে থাকতে হচ্ছে গাজার বাসিন্দাদের।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা সমুদ্রপথে গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার একটি বৈশ্বিক প্রচেষ্টা। এই নৌবহরে রয়েছে ৪০টির বেশি বেসামরিক নৌযান। এই বহরে প্রায় ৪৪টি দেশের ৫০০ মানুষের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়ামসহ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা, আইনজীবী, অধিকারকর্মী, চিকিৎসক ও সাংবাদিক।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার প্রথম বহর ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে। এরপর ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়া ও ইতালির সিসিলি দ্বীপ থেকে আরো নৌযান এই বহরে যুক্ত হয়। এ ছাড়া গ্রিসের সাইরাস দ্বীপ থেকে পরবর্তী সময়ে আরো কিছু নৌযান ত্রাণ নিয়ে বহরে যুক্ত হয়।
এর আগে গত জুন মাসে গাজার দিকে ত্রাণ নিয়ে যাওয়া একটি নৌযান আটক করেন ইসরায়েলি সেনারা। গাজা থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমেটার দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ‘ম্যাডলিন’ নামে নৌযানটি আটক করা হয়। ওই নৌযানে গ্রেটা থুনবার্গসহ ১২ জন অধিকারকর্মী ছিলেন। পরে জুলাই মাসে নৌযান ‘হান্দালা’কে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com