চিকিৎসায় নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী
প্রকাশ : ০৬-১০-২০২৫ ১৭:১৭

ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা কেমন করে নিজের অঙ্গপ্রতঙ্গের ক্ষতি না করে জীবাণু থেকে সুরক্ষা দেয়, সেই কৌশল উদঘাটনের স্বীকৃতিতে তিন গবেষক পেলেন চিকিৎসার নোবেল। সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট সোমবার (৬ অক্টোবর) এবারের বিজয়ী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী ম্যারি ব্রাঙ্কো ও ফ্রেড রামসডেল এবং জাপানের সিমন সাকাগুচির নাম ঘোষণা করে।
নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য বাবদ এক কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার ভাগ করে নেবেন তারা।
গত বছর চিকিৎসায় নোবেল পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক ভিক্টর অ্যাম্ব্রস ও গ্যারি রাভকুন। মাইক্রো আরএনএ আবিষ্কার এবং জিনের অভিব্যক্তি নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার ওপর আলো ফেলার স্বীকৃতিতে তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
চিকিৎসা শাস্ত্রের পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়েই এবারের নোবেল পর্ব শুরু হল। মঙ্গলবার পদার্থবিদ্যা, বুধবার রসায়ন, বৃহস্পতিবার সাহিত্য এবং শুক্রবার শান্তিতে পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। সবশেষ ১৩ অক্টোবর অর্থনীতি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করবে নোবেল কমিটি।
পুরস্কার দেওয়ার সময় সোমবার কর্তৃপক্ষ বলেছে, ব্রাঙ্কো, রামসডেল ও সাকাগুচি পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স সংক্রান্ত তাদের আবিষ্কারের জন্য চিকিৎসায় নোবেল পেয়েছেন।
কর্তৃপক্ষ আরো বলেছে, আমাদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, যেন আমরা সব ধরণের জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করতে পারি এবং তার সঙ্গে অটোইমিউন রোগ এড়াতে পারি, এই বছরের পুরস্কার সে সম্পর্কিত।
পুরস্কারবিজয়ীরা সুইডেনের রাজার কাছ থেকে সোনার মেডেলও পাবেন। বিবৃতিতে পুরস্কার প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের আবিষ্কার নতুন গবেষণা ক্ষেত্রের ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং ক্যানসার এবং অটোইমিউন রোগের মতো বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করেছে।
১৯৬১ সালে জন্ম নেওয়া ম্যারি ই ব্রাঙ্কো যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন বলে নোবেল পুরস্কার কমিটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে। তিনি এখন সিয়াটলের ইনস্টিটিউট ফর সিস্টেমস বায়োলজির ঊর্ধ্বতন প্রকল্প ব্যবস্থাপক।
ফ্রেড রামসডেল জন্মেছেন ১৯৬০ সালে। ২৭ বছর বয়সে লস এঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা এ নোবেলজয়ী এখন স্যান ফ্র্যান্সিসকোর সোনোমা বায়োথেরাপিউটিকসের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা।
৭৪ বছর বয়সী সিমন সাকাগুচি জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৬ সালে ডক্টর অব মেডিসিন এবং ১৯৮৩ সালে পিএইচডি ডিগ্রি পান। তিনি এখন ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজি ফ্রন্টিয়ার রিসার্চ সেন্টারের সম্মানসূচক অধ্যাপক।
আগামী ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের রাজা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন। নোবেল পুরস্কারের সূচনা হয় ১৯০১ সালে আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছাপত্র অনুযায়ী। ডিনামাইট আবিষ্কারক নোবেল তার বিপুল সম্পদ উৎসর্গ করেছিলেন মানবতার কল্যাণে বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কার প্রদানের জন্য। পরে সংযোজিত হয় অর্থনীতির পুরস্কার; যা অর্থায়ন করে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিক্সব্যাংক।
প্রতিবছর বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ কমিটি পুরস্কার বিজয়ীদের নির্বাচন করে। চিকিৎসা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য ও অর্থনীতির পুরস্কার স্টকহোমে প্রদান করা হয়। কেবল শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় নরওয়ের রাজধানী অসলোতে; যা সুইডেন-নরওয়ের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক সম্পর্কের প্রতিফলন।
এক শতাব্দীরও বেশি সময় পেরিয়ে নোবেল পুরস্কার আজও বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত। প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর রাজপরিবারের উপস্থিতিতে আয়োজিত হয় নোবেল পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান ও নৈশভোজ; যা মানব সভ্যতার জ্ঞান, বিজ্ঞান ও শান্তির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের এক অনন্য ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com