দুর্গাপূজায় প্রথম চালানে ভারতে গেল সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ
প্রকাশ : ১৭-০৯-২০২৫ ১১:৪৮

ছবি : সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রথম চালানে সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আটটি ট্রাকে এসব ইলিশ ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ করে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বন্দর সূত্রে জানা যায়, ভারতের কলকাতার পাঁচটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রথম চালানের ইলিশ আমদানি করেছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ন্যাশনাল ট্রেডিং, এফএনএস ফিশ, জয় শান্তসী, মা ইন্টারন্যাশনাল ও আর জে ইন্টারন্যাশনাল।
অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে ছয়টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রথম চালানে ৩৭ টন ৪৬০ কেজি ইলিশ রপ্তানি করেছে। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সততা ফিশ, স্বর্ণালি এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, বিশ্বাস ট্রেডার্স ও লাকী ট্রেডিং।
জানা যায়, ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ হলেও দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ভারতে মোটিএক হাজার ২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে এ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন, ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ টন করে ৭৫০ টন, নয়টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে ৩৬০ টন এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ টন করে ৪০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজার আগেই পদ্মার ইলিশের পৌঁছে যাচ্ছে ভারতে।
জানা যায়, গত বছর দুই হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। রপ্তানি হয় এক হাজার ৩০৬ দশমিক ৮১৩ মেট্রিক টন ইলিশ; যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া রপ্তানি আদেশের ৪৪ ভাগ। অনেক প্রতিষ্ঠান মাছ না পেয়ে ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। এবারো মাছ সংকট ও অতিরিক্ত মূল্যের কারণে সব মাছ রপ্তানি করা সম্ভব হবে না বলে জানান মাছ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নূরুল আমিন বিশ্বাস।
ভারতের ফিস্ ইমপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, আমরা আশা করেছিলাম ইলিশের পরিমাণটা একটু বাড়বে। তবে বাংলাদেশেও ইলিশের উৎপাদন অনেক কম হয়েছে। হয়তো সে কারণেই ইলিশের পরিমাণ কম আসছে।
তিনি আরো বলেন, যাই হোক পূজার আগে ভারতের বাঙালিরা পদ্মার ইলিশের স্বাদ নিতে পারবে। এজন্য এপার বাংলার মানুষ বাংলাদেশ সরকারের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। পদ্মার ইলিশ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ত্রিপুরার মাছ প্রেমীদের জন্য একটি সুস্বাদু খাবার।
বেনাপোল মৎস্য কোয়ারেন্টাইন অফিসার সজিব সাহা জানান, এবার আসন্ন দূর্গাপূজায় ৩৭টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দিয়েছে ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে অনুমোদনকৃত ইলিশ রপ্তানি শেষ করতে হবে।
প্রতিকেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১২ দশমিক পাঁচ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে; যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় এক হাজার ৫৩৩ টাকা। প্রতিটি ইলিশের ওজন প্রায় এক কেজি ২০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজির মধ্যে বলে তিনি জানান।
জানা যায়, ২০২৩ সালে ৭৯ প্রতিষ্ঠানকে তিন হাজার ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদনের অনুকূলে বেনাপোল দিয়ে রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৬৩১ দশমিক ২৪ টন। ২০২২ সালে ৫৯ প্রতিষ্ঠানকে দুই হাজার ৯০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিলেও রপ্তানি হয়েছিল মাত্র এক হাজার ৩০০ টন। ২০২১ সালে ১১৫ প্রতিষ্ঠানকে চার হাজার ৬০০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমোদন দেয় সরকার। রপ্তানি হয়েছিল এক হাজার ৬৯৯ মেট্রিক টন ইলিশ। ২০২০ সালে দুর্গাপূজা উপলক্ষে এক হাজার ৪৫০ টন এবং ২০১৯ সালে ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল সরকার। ওই বছর রপ্তানি হয়েছিল ৪৭৬ মেট্রিক টন ইলিশ।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com