মানবতাবিরোধী অপরাধ : শেখ হাসিনার মামলার রায় ১৭ নভেম্বর
প্রকাশ : ১৩-১১-২০২৫ ১২:৪৯
ছবি : সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ মামলার রায় আগামী ১৭ নভেম্বর (সোমবার) ঘোষণা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বেলা ১২টা নয় মিনিটে ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ দিন নির্ধারণ করেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদসহ অন্যরা।
এ মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সাবেক আইজিপি মামুন ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী নামে পরিচিত) হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় প্রথম মামলাটি (মিসকেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। গত বছরের ১৭ অক্টোবর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের প্রথম বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেদিনই এ মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
প্রথম দিকে এ মামলায় শেখ হাসিনাই একমাত্র আসামি ছিলেন। চলতি বছরের ১৬ মার্চ এ মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আসামি করার আবেদন করে প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ) এবং ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন।
একাধিকবার সময় বাড়ানোর পর চলতি বছরের ১২ মে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
গত ১ জুন শেখ হাসিনাসহ এই তিন আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে এই তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। সেগুলো হলো গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ প্রদান; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পোড়ানোর অভিযোগ। এই পাঁচ অভিযোগে তিন আসামির বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল দেশের বাইরে । সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ মামলার একমাত্র গ্রেপ্তার আসামি। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের দিন (১০ জুলাই) সাবেক আইজিপি মামুন গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হওয়ার আবেদন করেন।
গত ১২ অক্টোবর এ মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু হয়। যুক্তিতর্ক শেষ হয় ২৩ অক্টোবর। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড চান চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। তিনি যুক্তিতর্কে এ মামলা থেকে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের খালাস আবেদন করেন। রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুনেরও খালাস আবেদন করেন তার আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com