রাত থেকে ঢাকায় বৃষ্টি, জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি
প্রকাশ : ২২-০৯-২০২৫ ১১:৩০

ছবি : সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে বৃষ্টি ঝরছে। আজ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বৃষ্টির তীব্রতা বাড়ে। সেই সঙ্গে ছিল বজ্রপাত। এতে করে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এখন জলমগ্ন। শহরের প্রধান সড়কগুলোসহ বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতেও তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে সাতসকালেও যারা ঘর থেকে বের হয়েছেন তাদের পড়তে হয়েছে ভোগান্তিতে।
রাজধানী আজ সকাল পৌনে ছয়টার দিকে বৃষ্টি নামে। সাতটা পর্যন্ত একটানা মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি থেমে থেমে এখনো ঝরছে।
সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, কলাবাগান, মগবাজার, কারওয়ান বাজার, গ্রিনরোড, মণিপুরী পাড়া, নিউমার্কেট, আসাদগেট, ঝিগাতলাসহ বিভিন্ন রাস্তায় পানি জমতে দেখা গেছে। কোথাও ছিল হাঁটুপানি, কোথাও কোমরসমান পানি। সড়কে জমে থাকা পানির কারণে অনেক এলাকাতে যানজটও তৈরি হয়েছে।
নিকুঞ্জের একটি অফিসে কাজ করে রুহুল রায়হান। তাকে পৌঁছাতে হবে সকাল আটটায়। এদিকে অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছিল। অগত্যা তিনি জুতা হাতে নিয়ে রওয়ানা দেন। তার মগবাজারের বাসার সামনে পানি। তিনি যখন হাতিরঝিলের সড়কে উঠেন দেখেন নানা জায়গায় পানি জমে আছে। গাড়িগুলো যখন ছুটছিল ভিজে যাচ্ছিল অনেকে। অনেক কষ্টে হাতিরঝিলের ব্রিজে এসে জুতা পায়ে দিয়ে বাস ধরেন তিনি। পথে নানা জায়গার সড়ক ডুবন্ত ছিল। অফিসে তিনি পৌঁছেন দেরি করে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী শামীমা নাসরিন বলেন, সকালে কারওয়ান বাজারে অফিসে যাওয়ার পথে গ্রিনরোডে আমি হাঁটুপানি পার হয়ে এসেছি। পশ্চিম তেজতুরী বাজারে রিকশা পর্যন্ত পানি উঠে গেছে।
ফকিরাপুল, কাকরাইল, মালিবাগ, রাজারবাগ, মতিঝিলের রাস্তায় কোমরসমান পানি পার হয়ে কর্মস্থলে এসেছেন বলে জানিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী শিফন আহম্মেদ।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রাতের শিফট শেষে সকালে বাড়ি ফেরার পথে জিগাতলা, গ্রিনরোড ও নিউমার্কেট এলাকায় রাস্তায় পানি জমেছে বলে জানান এস এম জারিফ। তিনি বলেন, স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগই ভিজেছেন। স্কুলগামী শিশুদের কোলে নিয়ে মা–বাবাকে যেতে দেখা গেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে আজ সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত রাজধানীতে ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যেই উত্তর বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সংঘটিত হয়ে যেতে পারে। আর সম্ভবত এর প্রভাবেই আজকে বৃষ্টি হচ্ছে। শুধু ঢাকা নয় উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের সর্বত্রই বৃষ্টি হচ্ছে। তবে উপকূলে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় ২৪ সেপ্টেম্বরের দিকে আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে এবং এটি ঘণীভূত হতে পারে।
রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আজ উত্তর বঙ্গ উপসাগরে এবং আগামী পরশু বুধবার পূর্ব বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার কথা। তিন দিনের ব্যবধানে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি খুব অস্বাভাবিক না হলেও এর প্রভাবে বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে ঝড়ো বাতাস এবং বৃষ্টি বেড়ে যেতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
কয়েক দিন ধরেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছিল প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম। রবিবার ও তার আগেরদিন শনিবার ঢাকার আকাশ ছিল ঘোলাটে। আজ থেকে বৃষ্টি বাড়তে পারে বলে আগেই জানিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৬ শতাংশ। রবিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com