আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, নিহত বেড়ে ২৫০
প্রকাশ : ০১-০৯-২০২৫ ১০:৩৬

ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে গভীর রাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কুনার প্রদেশে নিহতের সংখ্যা ২৫০ ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরো ৫০০ জন।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযান চলছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার সর্বোচ্চ সম্পদ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে রবিবার গভীর রাতে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুনার প্রদেশ। আফগান তথ্য মন্ত্রণালয় তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে জানিয়েছে, সেখানে অন্তত ২৫০ জন নিহত এবং ৫০০ জন আহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ছয়। জালালাবাদের পূর্ব-উত্তরপূর্বে ২৭ কিলোমিটার দূরে এবং ভূগর্ভের আট কিলোমিটার গভীরে এর উৎপত্তি হয়।
ইউএসজিএস আরো জানিয়েছে, প্রধান কম্পনের পর একই এলাকায় আরো দুটি আফটারশক আঘাত হানে, যার মাত্রা ছিল পাঁচ দশমিক দুই পর্যন্ত। নানগারহার জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, আহতদের স্থানীয় আঞ্চলিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, দুঃখজনকভাবে আজকের রাতের ভূমিকম্পে আমাদের কয়েকটি পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
তবে তিনি সুনির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করেননি। তিনি আরো জানান, স্থানীয় প্রশাসন ও বাসিন্দারা উদ্ধারকাজে অংশ নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ও পার্শ্ববর্তী প্রদেশগুলো থেকে সহায়ক দল ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছে। জীবন রক্ষায় সব ধরনের সম্পদ কাজে লাগানো হবে বলেও জানান মুজাহিদ।
আফগানিস্তান ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ, কারণ দেশটি ভারত ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত।
মূলত ভৌগলিক কারণেই মধ্য-দক্ষিণ এশিয়ার দেশ আফগানিস্তান ভূমিকম্পপ্রবণ। দেশটিতে ভূমিকম্পের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। সেই রেকর্ড পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গত তিন দশকে কেবল ভূমিকম্পের কারণে আফগানিস্তানে মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের।
১৯৯১ সালে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চলে হওয়া এক ভূমিকম্পে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও সোভিয়েত ইউনিয়নে ৮৪৮ জন মানুষ নিহত হয়েছিলেন।
তারপর ১৯৯৭ সালে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের প্রদেশ খোরাসানের কায়েন শহরে সাত দশমিক দুই মাত্রার ভূমিকম্পে দুই দেশে নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছিল এক হাজার ৫০০ জনেরও বেশি এবং ১০ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
পরের বছর ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফগানিস্তানের প্রায় বিচ্ছিন্ন ও তাজিকিস্তানের সীমান্তবর্তী উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ তাখারে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে আফগানিস্তান ও তাজিকিস্তানে নিহত হন প্রায় চার হাজার মানুষ, তার মধ্যে আফগানিস্তানে নিহতের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৩০০।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com