weather ২৬.৯৯ o সে. আদ্রতা ৮৩% , বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নবীজি (সা.) যেভাবে ঘরে সময় কাটাতেন

প্রকাশ : ১৩-০৮-২০২৫ ১৬:২৩

ছবি : সংগৃহীত

পিপলসনিউজ ডেস্ক
মানুষের প্রকৃত রূপ তার ঘরের চার দেয়ালের ভেতরে প্রকাশ পায়। বাইরের ব্যস্ততা শেষে তিনি এখানে কোনো প্রকার ভণিতা ছাড়া ফিরে আসেন। স্ত্রী-সন্তান, মা-বাবা, ভাই-বোন অথবা গৃহকর্মীর সঙ্গে আচরণে তার প্রকৃত চরিত্র প্রতিফলিত হয়।

নবীজি (সা.) বাইরের ব্যস্ততা শেষে অন্যান্য মানুষের মতো ঘরে ফিরতেন। ঘরে তার চরিত্রের নির্মলতা ফুটে উঠত। তিনি পারিবারিক কাজে সহযোগিতা করতেন। কখনো নিজের কাজ অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতেন না। নিজের কাজ নিজেই করতেন। এমনকি ঘরের ছোটখাটো কাজও নিজ হাতে করতেন। যেমন ছাগ দোহন করতেন ও পোশাকের উকুন তালাশ করতেন।

আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো নবীজি ঘরে অবস্থানকালে কী করতেন? তিনি বললেন, নবীজি (সা.) পোশাকের মধ্যে উকুন তালাশ করতেন, ছাগ দোহন করতেন ও নিজের কাজ নিজেই সম্পন্ন করতেন। (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস: ৩৪২)

নবীজির ঘর ছিল সবচেয়ে বরকতময়। এ ঘর থেকে ইসলামে আলো দিগ্বিদিক ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু সে ঘরে তিনি প্রায় সময় অনাহারে থাকতেন। এমনকি তার পরিবারের সদস্যদের উদর পূর্ণ করে খাওয়ার মতো খেজুরও থাকত না।

নুমান ইবন বাশির (রা.) বলেন, ‘আমি নবীজিকে দেখেছি, পেটভরে খাওয়ার মতো খারাপ খেজুরও তার ঘরে থাকত না।’ (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস: ৩৬৯)

কখনো তার ঘরের চুলায় পুরো মাস আগুন জ্বলত না। এ সময় তাদের দিন কাটত শুধু পানি ও খেজুর খেয়ে। আয়েশা (রা.) বলেন, আমরা মুহাম্মদ (সা.)-এর পরিবার সারাটা মাসপূর্ণ এমনও কাটাতাম যে আমরা আগুনও জ্বালতাম না। শুধু খুরমা ও পানি খেয়ে কাটিয়ে দিতাম। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৭,১৮০)

ঘরে নবীজির বিভিন্ন ঘরোয়া ব্যস্ততা থাকত। কিন্তু যখন আজান শুনতেন, মসজিদের উদ্দেশে বেরিয়ে যেতেন। আসওয়াদ ইবনে ইয়াজিদ (রহ.) বলেন, আয়েশাকে জিজ্ঞেস করলাম, নবীজি ঘরে কী করতেন? তিনি বললেন, তিনি ঘরোয়া কাজে ব্যস্ত থাকতেন, আর আজান শুনলে বেরিয়ে যেতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪,৯৭২)

নবীজি (সা.) মসজিদে ফরজ নামাজ আদায় করতেন, অন্যদের মসজিদে ফরজ নামাজ আদায়ের জন্য বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতেন। মসজিদে অনুপস্থিত ব্যক্তিদের জন্য ধমকও দিয়েছেন।

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত একটি হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘নামাজ দাঁড়িয়ে গেলে যে সম্প্রদায় নামাজে উপস্থিত হয় না, আমার ইচ্ছা হয় তাদের বাড়ি গিয়ে তা জ্বালিয়ে দিই।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২২৫৯)

তবে তিনি নফল নামাজ আদায় করতেন ঘরে। ঘরে নফল আদায়ের জন্য নির্দেশও প্রদান করেছেন। তাহাজ্জুদের দীর্ঘ নামাজ ঘরে পড়ার অভ্যাস ছিল তার।

আবদুল্লাহ ইবন সাদ (রা.) বলেন, ‘আমি নবীজিকে জিজ্ঞাসা করলাম, নফল নামাজ আমার ঘরে পড়া উত্তম, নাকি মসজিদে পড়া উত্তম? তিনি বললেন, তুমি দেখছ না আমার ঘর মসজিদের কত কাছে, তারপরও ফরজ নামাজ মসজিদে পড়ে অন্যান্য নামাজ ঘরে পড়াটাই ভালো মনে করি।’ (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস: ২৯৭)

তিনি ঘরকে পুরোপুরি নামাজশূন্য রাখতে নিষেধ করতেন। যে ঘরে কোনো নামাজ পড়া হয়, সে ঘরকে কবরের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) বর্ণিত এক হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের কিছু নামাজ ঘরে আদায় করবে এবং তোমাদের ঘরকে কবরে পরিণত করো না।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৯৩৮)

নবীজির প্রতিদিন ছিল কর্মমুখর। এ কর্ম যেমন বাইরে ছিল, তেমনি ছিল ঘরের ভেতর। বাইরের এত ব্যস্ততা শেষে ঘরে ফিরে নিজের কাজ নিজ হাতে সম্পন্ন করতেন। এতে তার মোটেও দ্বিধাবোধ ছিল না।

পিপলসনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --


CONTACT

ads@peoplenewsbd.com

রোহিঙ্গাদের সিম দেবে সরকার, প্রথম ধাপে ১০ হাজার রোহিঙ্গাদের সিম দেবে সরকার, প্রথম ধাপে ১০ হাজার ভারতকে এমন শিক্ষা দেব, কখনো ভুলবে না: শেহবাজ শরীফ ভারতকে এমন শিক্ষা দেব, কখনো ভুলবে না: শেহবাজ শরীফ নৌকাসহ পাঁচ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি নৌকাসহ পাঁচ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি জাতীয়করণের দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মহাসমাবেশ চলছে জাতীয়করণের দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মহাসমাবেশ চলছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে কাজ করছে সরকার : প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে কাজ করছে সরকার : প্রধান উপদেষ্টা