যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস বিক্ষোভে উত্তাল
প্রকাশ : ০৯-০৬-২০২৫ ১৬:৫৪

ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর আবারো বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে; যার মূলে রয়েছে অভিবাসনবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে জনরোষ। শহরের কেন্দ্রস্থলে কয়েকদিন ধরেই চলা এই বিক্ষোভ নতুন মাত্রা নিয়েছে, যখন বিক্ষোভকারীরা একাধিক যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেন। পুলিশ জানায়, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে এবং পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
বিক্ষোভ তৃতীয় দিনের মতো অব্যাহত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম প্রেসিডেন্টের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেন, এটি উদ্বেগজনক ক্ষমতার অপব্যবহার। তিনি গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন। আর শহরের মেয়র কারেন ব্যাস মনে করেন, এই বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী মূলত কেন্দ্রীয় প্রশাসনের উস্কানিমূলক আচরণ।
বিক্ষোভকারীরা যখন শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে, তখন পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে। পুলিশের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিক্ষোভকারীদের ছোড়া বিভিন্ন জিনিসে তাদের বেশ কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে ১০১ ফ্রিওয়ে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। রাস্তা খুলে দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার তা বন্ধ হয়ে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে বেশ কয়েকজনকে আটক করতে হয়।
বিক্ষোভকারীরা মূলত সমবেত হয়েছিলেন সেই জায়গায়, যেখানে কয়েকদিন আগে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) অভিযান চালিয়ে ১১৮ জন অনিবন্ধিত অভিবাসীকে আটক করে। এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে জনমনে। গভর্নর নিউসম এ ধরনের অভিযানকে অমানবিক বলে নিন্দা জানান।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক সামাজিক মাধ্যম পোস্টে কোনো প্রমাণ ছাড়াই বিক্ষোভকারীদের ‘পেইড বিদ্রোহী’ বলে উল্লেখ করেন এবং মেয়র ও গভর্নরের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তাদের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এরা প্রতিবাদকারী নয়, এরা সমস্যা সৃষ্টিকারী ও বিদ্রোহী।
অন্যদিকে মেয়র ব্যাস বিক্ষোভকারীদের প্রতি শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং আশ্বস্ত করেছেন, নগর প্রশাসন লস অ্যাঞ্জেলেসবাসীর পাশে রয়েছে।
বর্তমানে শহরে দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ইউএস নর্দার্ন কমান্ড জানিয়েছে, প্রয়োজনে প্রায় ৫০০ মেরিন সেনা মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাদের মূল দায়িত্ব হবে রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষা এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা। সেনা সদস্যরা সশস্ত্র থাকলেও তারা কেবল আত্মরক্ষার প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করবেন বলে জানানো হয়েছে।
এই বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে অভিবাসন নীতির কঠোরতা এবং এর ফলশ্রুতিতে উদ্ভূত সামাজিক অস্থিরতা নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com