যুদ্ধবিরতিতে সম্মত সিরিয়া ও ইসরায়েল
প্রকাশ : ১৯-০৭-২০২৫ ১৬:১৮

ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
টানা চার দিন ধরে সংঘাত এবং ৩২১ জন নিহত হওয়ার পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই প্রতিবেশী দেশ ইসরায়েল ও সিরিয়া। তুরস্কের মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম বারাক শুক্রবার (১৮ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এক্সবার্তায় টম বারাক বলেন, তুরস্ক, জর্ডান এবং অন্যান্য প্রতিবেশীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইসরায়েল এবং তুরস্ক যুদ্ধবিরতিতে যেতে সম্মত হয়েছে। সব দ্রুজ, বেদুইন এবং সুন্নিরা যেন তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে এবং সব নাগরিককে সঙ্গে নিয়ে একটি নতুন সিরিয়া গঠনের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত তথ্য জানতে ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাস এবং কানাডার সিরীয় কনস্যুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। কিন্তু এই দুই কূটনৈতিক মিশনের কোনো কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গত মঙ্গলবার সোয়েইদায় একটি পারিবারিক জমায়েতে হামলা চালায় একদল বন্দুকধারী। এতে নিহত হন কমপক্ষে ১৩ জন এবং আহত হন আরো বহুসংখ্যক। এই বন্দুকধারীরা সবাই সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা’র নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোট হায়াত তাহরির আল শামসের (এইচটিএস) সদস্য এবং কট্টরপন্থি সুন্নি।
পরদিন বুধবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় সোয়েইদায় সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। তেল আবিবের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্প্রতি সিরিয়ায় দ্রুজ ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে সাম্প্রদায়িক সংঘাত শুরু হয়েছে এবং ইসরায়েল দ্রুজদের রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এর আগে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সোয়েদায় দ্রুজ, সিরীয় বেদুইন ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘাত চলে। সংঘাত থামাতে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা সোয়েদায় সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু সেনাবাহিনী যাওয়ার পর সংঘাত কমার পরিবর্তে তার মাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। এই পরিস্থিতিতেই সিরিয়ায় হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে গত চার দিনের সংঘাতে মানবিক বিপর্যয়ের প্রায় দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে সোয়েইদার বাসিন্দারা। খাবার, পানি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের যোগান প্রায় শেষের পর্যায়ে এবং বিদ্যুৎ, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ বন্ধ আছে।
সোয়েইদার বাসিন্দা ২৮ বছর বয়সী যুবক মুদার রয়টার্সকে বলেন, আমরা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে আছি। চারদিন ধরে সোয়েইদায় খাবার নেই, পানি নেই, জ্বালানি নেই, বিদ্যুৎ নেই— এক কথায় কিছুই নেই।
উল্লেখ্য, দ্রুজ মতবাদের অনুসারীরা ধর্মীয় সংখ্যালঘু হলেও বেশ প্রভাবশালী। ইরানের সুফি সাধক ও ধর্মগুরু ইসমাইল নাশতাকিন আদ-দারাজি এই মতবাদের প্রবক্তা। আদ-দারাজির অনুসারীরা নিজেদের দ্রুজ বলে পরিচয় দেন। খ্রীস্টিয় নব শতকের শেষ দিকে দ্রুজ মতবাদের উত্থান ঘটে।
দ্রুজ মূলত ইসলামের শিয়া মতবাদেরই একটি শাখা। দ্রুজ ধর্মাবলম্বীরা নিজেদের আহলে তাওহিদ (একেশ্বরবাদী) বলে প্রচার করেন। মুসলিমদের মতোই তারা আল্লাহ, হজরত মুহম্মদ (সা.) এবং চার খলিফায় বিশ্বাস করেন। তবে তারা আরও বিশ্বাস করেন যে মানুষের মধ্যেই সৃষ্টিকর্তা বিরাজমান।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com