রাজধানীতে সকালে তিন ঘণ্টায় ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি
প্রকাশ : ২২-০৯-২০২৫ ১২:৪৮

ছবি : সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে আজ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে তিন ঘণ্টায় ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি শুরু হয়েছিল রবিবার রাত থেকেই। আজ ভোরের দিক থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায়। এর কারণে নগরীর অনেক স্থানে পানি জমে যায়।
এতে বিপদে পড়েন অফিসগামী যাত্রীরা। শুধু রাজধানী নয়, বৃষ্টি হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। আবার আগামী বুধবারও আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টির শঙ্কা আছে।
আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আজকের এই বৃষ্টি। রাজধানীতে তিন ঘণ্টায় ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর রবিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সকাল ৯টা— এই নয় ঘণ্টায় ১০৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, আজ রাজধানীতে আর খুব বৃষ্টির সম্ভাবনা কম।
কোনো এলাকায় ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারী বৃষ্টি বলে। আর এর বেশি হলে তাকে বলা হয় অতি ভারী বৃষ্টি।
রাজধানীর আজকের বৃষ্টিতে নগরীর অনেক স্থানে পানি জমে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী লোকজন। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, কলাবাগান, মগবাজার, কারওয়ান বাজার, গ্রিনরোড, মণিপুরিপাড়া, নিউমার্কেট, আসাদগেট, জিগাতলাসহ বিভিন্ন রাস্তায় পানি জমতে দেখা গেছে। কোথাও ছিল হাঁটুপানি, কোথাও কোমরসমান।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকেও নিউমার্কেট এলাকার সড়কে পানি আটকে ছিল। ফকিরাপুল, কাকরাইল, মালিবাগ, রাজারবাগ, মতিঝিলের রাস্তায় কোমরসমান পানি পার হয়ে কর্মস্থলে এসেছেন বলে জানিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী শিপন আহম্মেদ।
সুকান্ত হালদার নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, সকালে মগবাজার থেকে উত্তরায় অফিসে যেতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়েছিলাম। ব্যাপক বৃষ্টি। ভিজে-ভিজে অফিসে এলাম। আমি মেট্রোতে এসেছি। তবে, নিচের সব সড়কে জলাবদ্ধতা দেখেছি।
নিকুঞ্জের একটি অফিসে কাজ করে রুহুল রায়হান। তাকে পৌঁছাতে হবে সকাল আটটায়। এদিকে অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছিল। অগত্যা তিনি জুতা হাতে নিয়ে রওয়ানা দেন। তার মগবাজারের বাসার সামনে পানি। তিনি যখন হাতিরঝিলের সড়কে উঠেন দেখেন নানা জায়গায় পানি জমে আছে। গাড়িগুলো যখন ছুটছিল ভিজে যাচ্ছিল অনেকে। অনেক কষ্টে হাতিরঝিলের ব্রিজে এসে জুতা পায়ে দিয়ে বাস ধরেন তিনি। পথে নানা জায়গার সড়ক ডুবন্ত ছিল। অফিসে তিনি পৌঁছেন দেরি করে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সোমবার সকালের নিয়মিত বুলেটিনে বলেছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় ২৪ সেপ্টেম্বরের দিকে আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এটি ঘণীভূত হতে পারে।
এর প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এই সময়ে সারাদেশে দিন এবং বাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে ফেনীতে ১১৬ মিলিমিটার। এ ছাড়া, নোয়াখালীর মাইজদীকোর্টে ৯০ মিলিমিটার এবং চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এই সময়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ময়মনসিংহে ৩৫ দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল বান্দরবান ও রামগতিতে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com