ঢাকায় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে
প্রকাশ : ২২-১১-২০২৫ ১১:০৬
ছবি : সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
তিন দিনের সরকারি সফরে শনিবার (২২ নভেম্বর) ঢাকায় পৌঁছেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে। এদিন সকাল ৮টায় হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। বিমানবন্দরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস টোবগেকে অভ্যর্থনা জানান।
এদিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। পরে দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। বৈঠকের পর আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ, ভুটানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ এবং কৃষি সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম জানান, প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে আগামী ২২-২৪ নভেম্বর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফর করবেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১৩ সদস্যের সফরকারী উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল থাকবে। এই দলে ভুটানের পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী এবং শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রীসহ উচ্চ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
তিনি আরো জানান, শনিবার সকালে প্রধান উপদেষ্টা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে যথাযথ মর্যাদায় বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানাবেন। বিমানবন্দরে গার্ড অব অনার গ্রহণ করার পর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। দুপুরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
পররাষ্ট্রসচিব জানান, একই দিনে প্রধানমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন। এরপর দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, যোগাযোগ, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ, পর্যটন, সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া, শিল্পসহ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করা হবে।
তিনি জানান, দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ কর্তৃক দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উত্থাপন করার সুযোগ রয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ভুটানকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কৃষি, পর্যটন ও ক্রীড়া বিষয়ক কয়েকটি সহযোগিতার প্রস্তাব দিতে পারে এবং ভুটানে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, পানি ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশি পেশাদারদের নিয়োগে ভুটান সরকারের সহযোগিতা চাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বিষয়েও আলোচনা হবে বলে আশা করা যায়।
পররাষ্ট্রসচিব আরো জানান, বৈঠক শেষে ভুটানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ, ভুটানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ এবং কৃষি সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়গুলো এখনো আলোচনাধীন। রাতে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তার সম্মানে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন। পরদিন ২৩ নভেম্বরে তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। বাংলাদেশ সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলও ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারে।
আসাদ আলম সিয়াম বলেন, ২০২০ সালে বাংলাদেশের প্রথম অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি ভুটানের সঙ্গে সম্পাদিত হয়েছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সৌহার্দ্য ও আন্তরিকতার ওপর ভিত্তি করে, দুই দেশের জনগণের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে। আসন্ন সফরে এই সম্পর্ক আরও বিস্তৃত ও গভীর করার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা কীভাবে আরও বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হবে।
২৪ নভেম্বর সোমবার সকালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী থিম্পুর উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তাকে বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com