weather ২৬.৯৯ o সে. আদ্রতা ৮৩% , বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভাইরাল হয়ে বিপাকে ফুটপাতের সেই হোটেলমালিক

প্রকাশ : ১৩-০৮-২০২৫ ১৬:১৬

ছবি : সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুটপাথের পাশে ছোট্ট একটি ভাতের হোটেল। সারি সারি খাবার সাজানো এ হোটেলে নেই কোনো কর্মচারী। কর্মীবিহীন হোটেলে একাই সব সামলান মিজান। 

রান্না নিজেই করেন। তারপর খাবার সাজিয়ে রাখেন। হোটেলে আসা কাস্টমাররা যে যার মতো খাবার নিয়ে খাচ্ছেন। তারপর একটি প্লাস্টিকের কৌটায় টাকা রেখে যাচ্ছেন।

কেউ একটু কম দিচ্ছেন, তো যার কাছে টাকা নেই তিনি দিচ্ছেন না। এভাবেই চলছিল মিজানের ভাতের হোটেলটি। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় উঠে আসে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভাতের হোটেলটি প্রচারণায় আসার পর ব্যাপক ভাইরাল হয়। মানুষ তুমুল ভিড় জমাতে শুরু করে মিজানের হোটেল। ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই মিজানের ব্যবসার অবস্থা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়। আগের তুলনায় তার বিক্রি অনেক কমে গেছে এবং অনেক গ্রাহক অযাচিতভাবে বেশি খাবার নিয়ে কম টাকা দিয়ে চলে যাচ্ছেন। অনেকে আবার টাকাও দিচ্ছেন না। এ ছাড়া প্রশাসনও চাপ দিচ্ছে হোটেল বন্ধ করতে।

এ ঘটনায় রীতিমতো মুষড়ে পড়েছেন মিজান। তিনি জানান, ইউটিউবার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা তার দোকানে আসার কারণে রান্নার কাজে ব্যাঘাত ঘটে এবং তার জন্য ব্যবসা কমে গেছে। এ ছাড়া ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশের হুমকি ও স্থানীয় প্রশাসনের উচ্ছেদের চাপ তাকে মানসিকভাবে ভেঙে দিচ্ছে। ভাইরাল হয়েই যেন কপাল পুড়ল মিজানুর রহমানের। যেখানে সারা দিনে মিলে বিক্রি করতেন এক হাজার ২০০ টাকারও বেশি। এখন ভাইরাল হওয়ার পর বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। অনেকে বেশি বেশি খেয়ে খুব কম টাকা দেন। আবার অনেকে টাকাই দেন না। 

মিজান বলেন, আমি তো আর জানতাম না যে ভাইরাল কারে কয়। ভাইরাল হলে কেমন হইব এটা আমি জানলে তো আর এই ক্যামেরার সামনে আমি আসতাম না।

মানুষ তার দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে জানিয়ে মিজান বলেন, মানুষ বেশি হয়ে গোশত তিন চার পিস করে নিয়ে খেয়ে চলে যায়, আমি কিছু বলতে পারি না। মানুষ যেমন, তেমন মিডিয়া, তেমন কাস্টমার। পুরা আউলা ঝাউলা অবস্থা। আমি এক ব্যাগ গোশত পাক করে রাখি ১০ কেজির। অথচ আমার ডিব্বার ভিতরে দেখা যায় মাত্র ১ হাজার টাকা হয়েছে। ভাত কিন্তু তেমন খায় না। অনেক মানুষ আছে আমার দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে। তার পরেও আমি বলতে রাজি না। এরা তিন চার পিস করে নিয়ে খাওয়ার কারণে আমার হাজিরার টাকাও থাকে না।

ভাইরাল হওয়ার পর ‘ফুটপাতের বুফে’ নামে খ্যাত এই হোটেলে বেচা বিক্রি কমার পেছনে একদল ইউটিউবার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের দায়ী করলেন মিজান। বললেন সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে দিনের বেশিরভাগ সময় চলে যাচ্ছে। তাই আর রান্না না করতে পেরে বিক্রি হচ্ছে না তার দোকানে। যারাই আসছে, ঠিকমতো খেতে পারছে না। খাওয়া শুরু করলে মিডিয়ার লোক, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর যারা আসছে সবাই রিভিউ নিচ্ছে। খাবার ঠিকমতো হচ্ছে না। এমন বহুমুখী সমস্যায় রীতিমতো নাজেহাল মিজান।

প্রশাসনও এসে হোটেল সরাতে বলেছে জানিয়ে মিজান বলেন, পুলিশ এসে আমাকে না করার পরে আমি উল্টাপাল্টা বক্তব্য দিছি। অনেক প্রধানরে নিয়ে বলসি। অনুরোধ যে আমার এই বক্তব্যটা নিয়ে এরা যেন রাগ না করে। আমি তো আর তেমন শিক্ষিত না। আমি যা বুঝি সেটা করি।

এরপরেই তিনি ভেঙে পড়েন কান্নায়। কান্না চোখে মিজান জানান, মাগরিবের আগেই আমার বাসায় চলে যেতে হয়। তার স্ত্রীও তাকে এখন দেখতে পারেন না। ব্যবসা চরম মন্দা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে অসহায়বোধ করছেন তিনি। সবাইকে অনুরোধ জানান তার ব্যবসা নষ্ট না করার জন্য।

পিপলসনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --


CONTACT

ads@peoplenewsbd.com

রোহিঙ্গাদের সিম দেবে সরকার, প্রথম ধাপে ১০ হাজার রোহিঙ্গাদের সিম দেবে সরকার, প্রথম ধাপে ১০ হাজার ভারতকে এমন শিক্ষা দেব, কখনো ভুলবে না: শেহবাজ শরীফ ভারতকে এমন শিক্ষা দেব, কখনো ভুলবে না: শেহবাজ শরীফ নৌকাসহ পাঁচ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি নৌকাসহ পাঁচ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি জাতীয়করণের দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মহাসমাবেশ চলছে জাতীয়করণের দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মহাসমাবেশ চলছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে কাজ করছে সরকার : প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে কাজ করছে সরকার : প্রধান উপদেষ্টা