মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি : মৃত্যু বেড়ে ৩১, চিকিৎসাধীন ৬৯
প্রকাশ : ২৩-০৭-২০২৫ ০০:৩০

ছবি : সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। সোমবার দুপুরে সংঘটিত এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৩১ জন, যাদের ২৫ জনই শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী। এ ছাড়া চিকিৎসাধীন অনেকেই দগ্ধ ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন। স্কুল চলাকালীন জনবহুল ভবনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে বিকট বিস্ফোরণের পর মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং ভবনজুড়ে সৃষ্টি হয় বিভীষিকাময় দৃশ্য।
দুর্ঘটনার পরপরই হাসপাতালগুলোতে হতাহতদের ভর্তি করা হয়, তবে আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ ও অভিভাবকের পরিচয় না থাকায় পরিচয় শনাক্ত ও চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বার্ন ইনস্টিটিউটে মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে মঙ্গলবার শোক পালন করা হয়েছে, স্থগিত থাকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। শোক পালনের অংশ হিসেবে গতকাল সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি ও সাংত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
এ দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি নিহত-আহতদের জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ, উন্নত চিকিৎসা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে জরুরি তথ্যসম্বলিত আইডি কার্ড চালুর নির্দেশও দিয়েছেন আদালত। সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, হতাহতের বিষয়ে কোনো তথ্য গোপন করা হবে না এবং সবধরনের সহায়তা নিশ্চিত করা হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান হতাহতের তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, চিকিৎসাধীন ৬৯ জনের মধ্যে ১০ জনকে ‘শঙ্কামুক্ত’ বলে মনে করা হচ্ছে। ৩০ জনের অবস্থা এখনো ‘অস্পষ্ট’, তাদের ১০ জনের অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’ বলে জানিয়েছেন তিনি। আর বাকিদের অবস্থা ‘মাঝারি’ ধরনের।
এদিকে মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে নিহতের একই সংখ্যা অর্থাত ৩১ জন জানায়। অবশ্য আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতলে ভর্তি আছেন ১৬৫ জন।
অন্যদিকে আইএসপিআরের জানানো মৃত্যুর সংখ্যার তথ্যে পার্থক্যের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারীর ভাষ্য, সংখ্যাটায় খুব বেশি পীড়াপীড়ির কিছু নেই। বিভ্রান্তি দূর হতে আমাদের একটু সময় দেন, দূর হয়ে যাবে।
সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন নিহত ৩১ জনের মধ্যে ১৫ জন সিএমএইচ-এ এবং ১০ জন বার্ন ইনস্টিটিউটে ছিলেন। বাকি ছয় জনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারীর কাছ থেকে উত্তর পাওয়া যায়নি।
বার্ন ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের সামনে এসে মৃত্যু সংখ্যা নিয়ে ‘অস্পষ্টতার’ বিষয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
পরে এ বিষয়ে জবাব দিতে সাংবাদিকদের সামনে সায়েদুর রহমান বলেন, এখানে আসার আগে আমরা আইএসপিআরের সঙ্গে কথা বলেছি। আইএসপিআরের তথ্যে যে একটি হাসপাতাল অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সেটি হচ্ছে লুবনা। লুবনা হাসপাতালের তথ্যের বিষয়ে এখানে আসার আগ মুহূর্তে আমরা যোগাযোগ করেছি। তাদের ওখানে তাদের হিসেবে রেজিস্ট্রিতে কোথাও কোনো মৃত নেই। কিন্তু ওনারা মুখে বলছেন সেখানে দুজন শিশু ব্রড ডেড ছিল, যাদেরকে তাদের অভিভাবকরা নিয়ে এসেছেন। ওই দুইজন আসলে পরবর্তীতে আমাদের কোনো হাসপাতালে আসেননি বিধায় ওই দুইজনের রেকর্ড পাওয়া যাচ্ছে না।
যারা লুবনা হাসপাতালে মারা গিয়েছে, সেই অভিভাবকদের ‘নামগুলোকে অন্তত তালিকাভুক্তির জন্য’ সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সায়েদুর।
একইসঙ্গে সিএমএইচের একজন এবং উত্তরা আধুনিক হাসপাতালের একজন মৃত্যুর তথ্য নিয়েও পার্থক্যের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, উত্তরা আধুনিকে, সেখান থেকে একজনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সিএমএইচে। সেটি নিয়ে আইএসপিআরের সঙ্গে আমাদের তথ্যের পার্থক্য হয়েছে। আমরা আসার আগে নিশ্চিত হয়েছি সিএমএইচে ১৫ জনেরই মৃতদেহ আছে। যদিও আইএসপিআরের তথ্যে সেখানে বলা হয়েছে ১৬ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী সায়েদুরের ভাষ্য, তথ্যের পার্থক্যগুলো দূর হতে হয়তো একটু সময় লাগবে। যেহেতু মৃতদেহ এবং দেহাবশেষ নিয়ে আমাদের কিছু পার্থক্য আছে।
অন্যান্য হাসপাতালের ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে তেমন কোনো ‘আপডেট নেই’ জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু এই হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে দুইজনকে আমরা কেবিনে শিফট করতে পেরেছি যেটাকে আমরা একটা উন্নতি বলে মনে করি। ভর্তি রোগীর মধ্যে ১০ জনকে শঙ্কামুক্ত বলে আমরা মনে করি। ৩০ জন একটা অস্পষ্ট জায়গায় আছে, যার মধ্যে ১০ জনকে মনে করছি এখনো শঙ্কার মধ্যে আছে। বাকিদের অবস্থা মাঝামাঝি জায়গায়।
অন্যান্য হাসাপতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করে ‘মাল্টিডিসিপ্লিনারি’ আটটি টিম যোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সায়েদুর বলেন, ইতোমধ্যে এ হাসপাতালের সঙ্গে যাদের চুক্তি আছে, সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদেরকে কেস রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। তাদের একজন সিনিয়র কনসালটেন্ট এবং দুইজন নার্স মঙ্গলবার রাতে এসে পৌঁছার কথা জানান তিনি। তিনি বলেন, আশা করবো তারা বুধবার থেকে এই টিমে যোগ দিতে পারবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আহতদের চিকিৎসায় ৭০-৮০ রকমের সরঞ্জামাদি প্রয়োজন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।
সংখ্যা নিয়ে পার্থক্যের বিষয়ে ১৬৫ জন আহতের যে কথা বলা হচ্ছে সে বিষয়ে তার বিশ্লেষণ, উত্তরা আধুনিকে ৬০ জন, লুবনাতে ১৩ জন ছিল তালিকায়। যাদের বেশিরভাগদেরকেই পরে অন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
রেকর্ড কিপিং এবং মুভমেন্টের কারণে এই ‘ডুপ্লিকেশন’ হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঢাকা মেডিক্যালের তিন জনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়েছে। সিএমএইচ থেকে তিনজন পাঠানোর কথা বলেছে।
নিহতদের মধ্যে এখনো অশনাক্ত ছয় জন জানিয়ে সায়েদুর বলেন, তাদের শনাক্তের জন্য ‘ডিএনএ’ স্যাম্পল রাখা হচ্ছে, যারা দাবি করবে ডিএনএ ম্যাচ করে শনাক্ত করা হবে। অশনাক্তের মধ্যে চার জনের জন্য স্বজনরা এখন পর্যন্ত ‘নিখোঁজের’ দাবি করেছেন, দুইজনের বিষয়ে কেউ এখনো কোনো দাবি করেননি।
যারা দাবি করেছেন তাদের ডিএনএ স্যাম্পল ম্যাচ করতে যে সময় লাগে ‘সেই সময়টা নেওয়া হবে’ বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শুরুরে সাংবাদিকদের সামনে এসে এই ঘটনাটিকে ‘অবর্ননীয়’ মন্তব্য করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, সোমবার এসে দেখি বার্ন ইনস্টিটিউটে লোকারণ্য। ভিড়টা কম হলে রোগীদের আনতে সুবিধা হত।
পরে তিনি ২৯ জন মৃত্যুর তথ্য দিতেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বাকি তথ্যের জন্য বিশেষ সহকারী সায়েদুরকে কথা বলার সুযোগ দেন।
আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ-অভিভাবকের পরিচয় না থাকায় ভোগান্তি: বিমান বিধ্বস্তের পর শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। হতাহত শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের গলায় আইডি কার্ড ঝোলানো থাকলেও তা কোনো কাজে আসেনি। তাতে ছিল না রক্তের গ্রুপ, অভিভাবকের নাম-পরিচয় কিংবা যোগাযোগের নাম্বার। এতে শিক্ষার্থীদের পরিচয় শনাক্তসহ চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হয়েছে।
মাইলস্টোনের মতো একটি নামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন নাম-সর্বস্ব আইডি কার্ড দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও চলছে তুমুল সমালোচনা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া কর্মীরা জানান, আহতদের অনেককে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের পরিচয় বা জরুরি চিকিৎসার জন্য যে ব্লাড গ্রুপ জানা দরকার সেটি সম্ভব হচ্ছিল না। গলায় থাকা পরিচয়ত্রপত্র (আইডি কার্ডে) কোনো তথ্য ছিল না। শুধু নাম, ক্লাস ও কোড ছিল। এটি দিয়ে তার পরিচয় বের করা সম্ভব নয়। আবার একই নামের অনেক বাচ্চা আছে। তাদের অভিভাবকের নাম থাকলে দ্রুত তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হতো।
হ্যাপি আক্তার নামে একজন অভিভাবক বলেন, ‘মাইলস্টোনের মতো এতবড় একটি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানে না, আইডি কার্ড কী? আইডি কার্ডে কী কী থাকা জরুরি তারা বোঝে না। কোনো প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন তাদের আইডি কার্ডে নেই। এমনকি রক্তের গ্রুপও নেই। এটা কীভাবে সম্ভব?’
মাহমুদুল নয়ন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘একটি স্কুলের আইডি কার্ড এমন হওয়া উচিত, যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে যেন গার্ডিয়ানকে কল দেওয়া যায়। মাইলস্টোনের মতো এত নামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্টুডেন্ট আইডি কার্ডে কেন স্টুডেন্টের পরিবারের কারো ফোন নাম্বার দেওয়া নেই? রক্তের গ্রুপ দেওয়া নেই? হাসপাতালে এত নম্বর কোডের বাচ্চার কেউ আছেন বলে চিৎকার করতে হচ্ছে। এটার বিহিত হওয়া জরুরি।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভাইস-প্রিন্সিপাল (অ্যাডমিন) মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘এ ফরম্যাটে আমাদের দীর্ঘদিন আইডি কার্ড বানানো হয়েছিল। এখন এ পরিস্থিতিতে বিষয়টি আমরা উপলব্ধি করতে পারছি। আগামীতে এ আইডি কার্ডে পরিবর্তন আনা হবে। সেখানে অন্যান্য জরুরি তথ্য যুক্ত করা হবে।’
বিমান বিধ্বস্তের সময় প্রায় ৩৫০ জনের মতো শিক্ষার্থী ক্লাসে ছিল: বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই দুইবার বিস্ফোরণ হয়। এরপর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। এতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ দগ্ধ হন অনেকেই।
মঙ্গলবার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখার সিনিয়র শিক্ষক ওয়ালিউল্লাহ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবে যেভাবে যুদ্ধবিমান রাউন্ড দেয়, সোমবারও বিমানটি ঠিক সেভাবে রাউন্ড নেয়, টার্ন করে। আমার কাছে মনে হয়েছিল, পাইলট ঢাকার বাইরে চলে যেতে চেয়েছিলেন।
ঘটনার সময় স্কুলেই ছিলেন ওয়ালিউল্লাহ। সেসময়ের দৃশ্য বর্ণনা করেন এভাবে- বিমান যখন পড়ে যায় তখন দুইবার বিস্ফোরণ হয়। প্রথম বিস্ফোরণে হালকা আওয়াজ হয়, তখন আগুন ছিল পেছনের অংশে। ছয়-সাত সেকেন্ড পর দ্বিতীয়বার যখন আবার বিস্ফোরণ হয় তখন বিকট শব্দ হয়। এরপর আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আমি বুঝতে পারছিলাম না কী করবো। পাশেই আবার দেড়টার দিকে স্কুলের বাস ছাড়ার কথা। সেই বাস থেকে একজন বের হয়ে বললো, স্যার আমাদের বাঁচান।
ওয়ালিউল্লাহ আরো বলেন, আমাদের স্কুল ও কলেজ মিলিয়ে ১০ হাজারের ওপর শিক্ষার্থী। স্কুল সেকশনে শিক্ষার্থী তিন হাজার ৮০০ জন। যে ভবনে বিমান বিধ্বস্ত হয় সেখানে প্রায় ৩৫০ জনের মতো শিক্ষার্থী ক্লাসে ছিল।
নিহতদের ৫ কোটি, আহতদের ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রুল : বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাটি তদন্তে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারকে পাচ কোটি টাকা এবং আহতদের এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্রে অভিভাবকের মোবাইল নম্বর ও রক্তের গ্রুপ সংযুক্ত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ছাত্র-ছাত্রীসহ বহু হতাহতের ঘটনায় কারণ অনুসন্ধানে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাত দিনের মধ্যে সরকারকে এই কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া মাইলস্টোন স্কুলের আহত শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো, মাইলস্টোন স্কুলের আগুনের পুড়ে যাওয়া নিহত শিক্ষার্থীদের পাচ কোটি টাকা এবং আহত শিক্ষার্থীদের এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উন্নত অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের সব জনবহুল এলাকায় ত্রুটিপূর্ণ বিমান উড্ডয়ন প্রশ্নে রুল জারি করেছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান, তানিম খান, সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির ও মো. ঈসা।
এর আগে এ ঘটনায় কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি ও ঢাকাসহ দেশের সব জনবহুল এলাকায় ত্রুটিপূর্ণ বিমান এবং যুদ্ধবিমান উড্ডয়নের নিষেধাজ্ঞা প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়। অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস জনস্বার্থে এ রিট আবেদনটি করেন। রিটে বিমানবাহিনীর অধীনে ত্রুটিপূর্ণ বিমানের সংখ্যা কত এবং এদের রক্ষণাবেক্ষণের কী কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে, তা জানতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com