weather ২৫.৯৯ o সে. আদ্রতা ৯৪% , মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি, মাছ-মাংসের দাম চড়া

প্রকাশ : ২৬-০৯-২০২৫ ১২:২৫

ছবি : সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক
সবজির বাজারে খানিক স্বস্তি ফিরতে শুরু করলেও মাছ ও মাংসের বাজারে দাম এখনো চড়া। সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে। বেড়েছে গরীবের মাছ খ্যাত পাঙাশ-তেলাপিয়ার দামও। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরবরাহ কমানোর অজুহাত দেখিয়ে প্রতি শুক্রবার বিক্রেতারা মাছ-মাংসের দাম বাড়াচ্ছেন।

খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। তবে বেশ কয়েকমাস বাদে বাজারে চালের দাম সামান্য নিম্নমুখী। মূলত ভারত থেকে আমদানি বাড়ায় এ প্রভাব বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, অর্থের যোগান না বাড়লেও সব দ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালানো এখন দায়। বাজারে গেলে মনে হয় সব পণ্য হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। মাছ-মাংস যেন বিলাসী খাবার হয়ে গেছে।

একমাসে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়ার পর ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগিও ২৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২৮০ টাকায় উঠেছে। 

গরুর মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে খাসির মাংসে চড়া দাম দেখা গিয়েছে। প্রকারভেদে কেজিপ্রতি এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

বাজারে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন মাছের ক্রেতারা। গত এক মাসে মাছের দাম কেজিপ্রতি ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এখন বাজারে মাঝারি ইলিশ কেজিপ্রতি দুই হাজার ৩০০ থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশের দাম এক হাজার ৭০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা। সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে ছোট আকারের ইলিশ; যা চার-পাঁচটি মিলে এক কেজি হয়- দাম ৭০০ টাকা।

অন্য মাছের মধ্যে রুই কেজিপ্রতি ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২২০-২৫০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, বাইলা ৮৫০ টাকা, টেংরা ৮০০ টাকা ও চিংড়ি কেজিপ্রতি এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সম্প্রতি বাদামি ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১৫০ টাকায় উঠলেও এখন কমে ১৪০ টাকায় নেমেছে। এ ছাড়া প্রতি ডজন হাঁস ও দেশি মুরগির ডিম যথাক্রমে ২২০-২৩০ ও ২৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, গত সপ্তাহে সয়াবিন তেলে দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব সরকার মেনে নেয়নি। সে কারণে এখন বাজারে তৈরি হয়েছে এই অস্থিরতা।

এখন খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭২ টাকা। আর সুপার পাম অয়েলের লিটার বিক্রি হয়েছে ১৫৫ টাকা ১৬০ টাকা দরে। চার দিন আগেও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের দাম ১৬৯ এবং পাম অয়েলের দাম ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

এদিকে, চাল বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ভারত থেকে এখন সরু নাজিরশাইল ও মোটা কয়েক পদের চাল আমদানি হচ্ছে। ওসব চালের দাম কমেছে।

এখন বাজারে প্রতিকেজি নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৮৪ থেকে ৮৬ টাকায়; যা আগে ৯০-৯২ টাকা ছিল। অন্যদিকে, মোটা পায়জাম ও স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা; যা কেজিপ্রতি চার-পাঁচ টাকা কমেছে। তবে মিনিকেট চাল আগের দামেই ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি দোকানেই পর্যাপ্ত মুরগি রয়েছে। ফলে ক্রেতাদের অনেকে দাম বাড়ানোর যুক্তি মানতে নারাজ। 

নতুন বাজারে ক্রেতা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, প্রতি সপ্তাহে যদি দাম এভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে তো মুরগিও খাবারের তালিকা থেকে বাদ যাবে। গরুর মাংস কিনতে পারি না, ভালো মাছ কিনতে পারি না, এখন যদি মুরগিও না পাই তাহলে চলবে কীভাবে?

নতুন বাজারের মুরগি বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে চাহিদা বেড়েছে, সরবরাহ তুলনামূলক কম। দুর্গাপূজা সামনে, তাই দাম আরও বাড়তে পারে।

বিক্রেতারা বলছেন, খাসির জোগান কম থাকায় দাম কমার সুযোগ নেই। রামপুরা বাজারের মাংস বিক্রেতা আব্দুল আলী বলেন, গরুর মাংসের বাজার গত দুই বছর ধরে এক জায়গায় পড়ে আছে। যারা একটু ভালো কোয়ালিটির রাখে, তারা ৮০০ টাকা করে বিক্রি করে। তা ছাড়া বাকি প্রায় সবাই ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে।

মগবাজারে বিক্রেতা আবদুল কাদের জানান, ইলিশের সরবরাহ কম, তার ওপর রপ্তানির চাপ আছে। এ কারণে দাম বাড়ছে।

শ্যামবাজারে বাজার করতে আসা দিনমজুর ছলেমান মিয়া বলেন, গরুর মাংস কিনতে পারি না, খাসি তো স্বপ্নের জিনিস। এখন মাছেও হাত বাড়ানো যায় না। বাচ্চাদের জন্য কখনো-কখনো মুরগি কিনতাম, সেটাও এখন কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

সরকারি চাকরিজীবী সেলিনা আক্তার বলেন, বাজারে কোনো কিছুতেই দরদামের সুযোগ নেই। বিক্রেতারা যা দাম বলেন, তাই দিতে হয়। খেটে-খাওয়া মানুষের জন্য এভাবে বাজার চালানো দিন দিন অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে।

পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, তেলের দাম নতুন করে বাড়েনি, তবে কমিশন কমিয়ে দিয়েছে সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো। এতে বাজারে বেড়েছে খোলা সয়াবিন ও সুপার পাম অয়েলের দাম। গত তিন-চার দিনের ব্যবধানে এই দুই ধরনের তেলের দাম বেড়েছে লিটারে পাঁচ টাকার মতো।

সেগুনবাগিচা বাজারে সজিব রাইস এজেন্সির কর্নধার সালমান হোসেন বলেন, ভারত থেকে প্রচুর চাল আসছে, তাই দাম কমছে। তবে দেশি যেগুলো মিনিকেট আছে, সেগুলো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। আমদানি আরও বাড়লে দাম আরও কমতে পারে।

পিপলসনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --


CONTACT

ads@peoplenewsbd.com

চিকিৎসায় নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী চিকিৎসায় নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী গ্রেটা  থুনবার্গসহ ১৬৫ জন অভিযাত্রীকে গ্রিসে পাঠাচ্ছে ইসরায়েল গ্রেটা থুনবার্গসহ ১৬৫ জন অভিযাত্রীকে গ্রিসে পাঠাচ্ছে ইসরায়েল দায়িত্বে থাকা সরকারি চাকরিজীবীদের ভোটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে: সিইসি দায়িত্বে থাকা সরকারি চাকরিজীবীদের ভোটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে: সিইসি গাজা যুদ্ধ অবসানের প্রচেষ্টায় সম্পৃক্ত সবাইকে দ্রুত এগোতে বললেন ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা যুদ্ধ অবসানের প্রচেষ্টায় সম্পৃক্ত সবাইকে দ্রুত এগোতে বললেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের জয়পুরে হাসপাতালে আগুন, ৮ রোগীর মৃত্যু ভারতের জয়পুরে হাসপাতালে আগুন, ৮ রোগীর মৃত্যু