গাজায় চিকিৎসক দম্পতির নয় শিশুসন্তান নিহত
প্রকাশ : ২৫-০৫-২০২৫ ১১:৪০

ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক নারী চিকিৎসকের ১০ শিশুর মধ্যে নয় জনই নিহত হয়েছে। ডা. আলা আল-নাজ্জার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তার স্বামী ও এক সন্তান মারাত্মকভাবে আহত অবস্থায় বেঁচে আছেন।
ব্রিটিশ সার্জন ও সহকর্মী ডা. গ্রায়েমে গ্রুম এই ঘটনাকে ‘অসহনীয় নিষ্ঠুরতা’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বহু বছর ধরে শিশুদের জন্য নিবেদিতভাবে কাজ করা একজন চিকিৎসক একদিনেই তার পুরো পরিবার হারালেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা শুক্রবার খান ইউনিসে ‘সন্দেহভাজন লক্ষ্যবস্তুতে’ বিমান হামলা চালিয়েছে। হামলার পর একটি ভিডিওতে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে পুড়ে যাওয়া দেহ উদ্ধার করতে দেখা গেছে। বিবিসি ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেছে।
আইডিএফ জানিয়েছে, খান ইউনিস একটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ যুদ্ধ এলাকা’ এবং অভিযান শুরুর আগে বেসামরিক নাগরিকদের ওই এলাকা থেকে সরে যেতে বলা হয়েছিল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবারের হামলায় অন্তত ৭৪ জন নিহত হয়েছেন এবং ১০০টিরও বেশি স্থানে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া বার্তায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক ডা. মুনির আলবোরশ জানান, ডা. আলা আল-নাজ্জারের স্বামী তাকে কর্মস্থলে পৌঁছে দিয়ে বাসায় ফিরে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই ওই হামলা হয়। তাদের সবচেয়ে বড় সন্তানের বয়স ছিল ১২ বছর। শিশুদের বাবা, যিনি নিজেও একজন চিকিৎসক, মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, এই পরিবারটির কোনো রাজনৈতিক বা সামরিক সংশ্লিষ্টতা নেই। এমনকি সামাজিক মাধ্যমেও তারা বিশেষভাবে পরিচিত নন। ডা. গ্রায়েমে গ্রুম জানান, বেঁচে থাকা একমাত্র সন্তানের বয়স ১১ বছর। তার বাঁ হাত ভেঙে ঝুলে ছিল। ছেলেটি হয়তো বাঁচবে, কিন্তু তার বাবার অবস্থা আশঙ্কাজনক, বলেন তিনি।
গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানিয়েছেন, হামলার পর আল-নাজ্জারের বাসা থেকে আটটি মৃতদেহ এবং কয়েকজন আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে আট শিশুর মৃত্যুর খবর জানানো হলেও দুই ঘণ্টা পর জানা যায়, মোট নয়টি শিশু মারা গেছে।
একজন চিকিৎসক ইউসেফ আবু আল-রিশ, যিনি আল-নাজ্জারের আত্মীয়, বলেন, আমরা অপারেশন রুমে দাঁড়িয়ে আছি শুধু সহমর্মিতা জানাতে। আমরা ভেঙে পড়েছি।
তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, যথেষ্ট হয়েছে। আমাদের দয়া করুন। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, সকল পক্ষ— হামাসসহ সবাইকে বলছি, দয়া করে আমাদের রেহাই দিন। আমরা ক্ষুধায়, দুর্দশায়, ঘরবাড়িহীন অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছি।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com