পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার আহত নীলগাইটির মৃত্যু
প্রকাশ : ২৫-০৫-২০২৫ ১১:২৯

ছবি : সংগৃহীত
কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে পঞ্চগড় থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা নীলগাইটি মারা গেছে। মারা যাওয়া নীলগাইটি মহিলা লিঙ্গের প্রাপ্ত বয়স্ক। শনিবার (২৪ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি হাসপাতালে মারা যায় ওই নীলগাইটি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সাফারি পার্কের সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য অবহেলা ও রোগ নিরূপণে দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে নীলগাইটির মৃত্যু হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পার্কের ভেটেরিনারি হাসপাতালের সার্জন খাতেম জুলকারনাইন। তিনি বলেন, দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি সঠিক না। ভেটেরিনারি হাসপাতালের কর্মীরা নিবিড় পরিচর্যায় নীলগাইটির চিকিৎসাসেবা ও দেখভাল করা হয়েছে।
সাফারি পার্ক সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ১১ মে পঞ্চগড় থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ১৫ মে সাফারি পার্কে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। শনিবার সকালে ওই নীলগাইটির মৃত্যু হয়। এর আগে, চলতি মাসের প্রথমদিন ১ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চার মাস পর একটি হাতি শাবক মারা গেছে।
ভেটেরিনারি সার্জন জানান, পঞ্চগড় থেকে আহত অবস্থায় নীল গাইটি ১৫ মে পার্কে আনা হয়েছে। এ সময় নীল গাইয়ের চারটি পাসহ পুরো শরীরে ব্যাপক আঘাতের চিহ্ন ছিল। এমনকি পায়ের জয়েন্ট ভেঙে গিয়ে তরল পদার্থ বের হওয়ার কারণে ক্ষতস্থানে ব্যাপক জীবাণু প্রবেশ করে মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয় এ পশুটি। এক পর্যায়ে রোগ প্রতিরোধে শারীরিক সক্ষমতাও হারিয়ে যায়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পরও নীলগাইটি সুস্থ না হয়ে মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, নীলগাইটির মৃত্যুর পর চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আরিফ উদ্দিন ও আমার (ভেটেরিনারি সার্জন) উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে সাফারি পার্কের ভেতরে মরদেহটি মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া নীলগাইটির মৃত্যুর কারণ অধিকতর নির্ণয়ের জন্য মরদেহের নমুনা ঢাকায় ল্যাবে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। চকরিয়ায় রেঞ্জ কর্মকর্তা মনজুর কাদের ভুঁইয়া বলেন, অফিসের কাজে চট্টগ্রাম অবস্থান করার কারণে বিস্তারিত জানা নেই।
এদিকে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা বলেন, সীমান্ত পেরিয়ে আসা নীলগাইগুলো প্রায়ই স্থানীয়দের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। এ ধরনের নৃশংসতার অবসান হওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, দেখতে ঘোড়ার মতো হলেও নীলগাই প্রকৃতপক্ষে অ্যান্টিলোপ-জাতীয় প্রাণী। একসময় বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নওগাঁ, জয়পুরহাট এলাকার বনে প্রাণীটির দেখা মিলত। তবে ১৯৪০ সালের পর বাংলাদেশে আবাসিক নীলগাই দেখা গেছে, এমন তথ্য পাওয়া যায় না। অনিয়ন্ত্রিত শিকার, বাসস্থান ও খাদ্যের অভাবসহ প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রাণীটি অনেক আগেই বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। প্রাণীটি সাধারণত দলবেঁধে থাকে।
তবে গত কয়েক বছর ধরে মাঝেমধ্যে যে কয়েকটি নীলগাই উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়, সেগুলো মূলত ভারত থেকে আসা। বর্তমানে ভারত ছাড়াও পাকিস্তান ও নেপালে নীলগাইয়ের বসবাস রয়েছে।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com