weather ৩২.৯৯ o সে. আদ্রতা ৫২% , মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বন চালতার ফুল ‘অগোয্যা’ পাহাড়িদের প্রিয় সবজি

প্রকাশ : ১৫-০৩-২০২৫ ১২:৫১

ছবি : সংগৃহীত

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
রাঙামাটি শহরের বনরূপা বাজারে সমতাঘাট এলাকায় গত বুধবার (১২ মার্চ) হাটের দিন সকালে একজন বিক্রেতার চারপাশে বেশ ভিড় লক্ষ করা যায়। কাছে যেতেই দেখা গেল, থুরঙে (বাঁশের ঝুড়ি) করে বিক্রি করছেন আমের মুকুলের মতো হলদে-সবুজ একধরনের সবজি।

এ যে ‘অগোয্যা’ বা ‘আগাজা গুলো’। চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছে এ নামে পরিচিত সবজিটি অতি আদরণীয়। কেবল চাকমা নয়, সব পাহাড়ি সম্প্রদায়ের প্রিয় সবজি এটি। ৬০০ টাকা কেজি দাম হাঁকছিলেন বিক্রেতা। কিন্তু দামের পরোয়া কে করে, মুহূর্তেই শেষ সব সবজি।

‘আগোয্যা’ বা ‘আগাজা’ আসলে বিরল বন চালতার ফুল। এই ফুল পাহাড়িরা রান্না করে খান। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এর স্বাদ অমৃতের মতো। সচরাচর বাজারে পাওয়া যায় না বলে দাম যতই হোক, আনার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি হয়ে যায়।

পরিবেশবিদ ও লেখক মৃত্যুঞ্জয় রায়ের একটি লেখা থেকে জানা গেছে, ইংরেজিতে গাছটির নাম ‘ডগ টিক’ বা ‘নেপালি এলিফ্যান্ট আপেল’। অহমিয়া ভাষায় ‘অকশি’। ঢাকা-ময়মনসিংহ অঞ্চলে এর নাম ‘আকুশি’, ‘আকশি’, ‘কারকোটা’, ‘আজুগি’, ‘আজুলি’ ইত্যাদি; চট্টগ্রামে ‘হারগজা’ বা ‘আরগেজা’; সিলেটে ‘একুশ’। ক্ষুদ্র জনজাতির ভাষায়ও এ গাছের বিচিত্র নাম আছে। ত্রিপুরারা একে বলে ‘মানদুই বাঠায়’ ও মারমারা ‘জাংব্রেসি’। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের কাছে বন চালতা এক মহামূল্যবান ভেষজ বৃক্ষ।

বন চালতা আসলে চালতারই সহোদর। এর উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম dillenia pentagyna। পরিবার ডিলেনিয়েসি। বন চালতা মাঝারি আকারের বৃক্ষ হলেও মাঝেমধ্যে বেশ বড় গাছও চোখে পড়ে। পাতা লম্বাটে ডিম্বাকার, কিনারা খাঁজকাটা, পাতার গোড়ার দিকটা সামান্য সরু।

বন চালতাগাছ পাহাড়ের বিভিন্ন বনে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। মার্চ মাসের শুরুতেই বাজারে এর ফুল আসতে শুরু করে। পাহাড়িরা বিভিন্ন বন ও জঙ্গল থেকে ফুল সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। ফুল ছাড়া এর ফলও খাওয়া হয় একইভাবে। ফুল ও ফল চিংড়ি ও মাছ দিয়ে রান্না করা হয়। এ ছাড়া অনেকে ভর্তা করেও খান। পাতাবিহীন অবস্থায় বসন্ত ও গ্রীষ্মে ছোট ছোট অসংখ্য ফুল আসে। এরপর ফল হয়। সেই থোকায় থোকায় ফুল ও ফল পেড়ে আনা হয় বিক্রির জন্য। ফুলে হালকা সুগন্ধও আছে।

বনরূপা বাজারে বন চালতা নিয়ে এসেছিলেন পারু তঞ্চঙ্গ্যা নামের এক সবজি বিক্রেতা। তিনি বলেন, ‘এ বছরের জন্য প্রথম আগাজা গুলো বিক্রি করছি। এই সবজিটি পাহাড়ি সম্প্রদায়ের কাছে খুবই প্রিয়। দাম যতই হোক, দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়।

রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের চেলাছড়া গ্রামে একটি বন চালতাগাছ আছে। গাছটি অনন্ত চাকমা নামের এক ব্যক্তির। তিনি বলেন, ‘আমি একটি গাছ সংরক্ষণ করে রেখেছি। এ বছর ফল ধরা শুরু করেছে। এখনো বিক্রি শুরু করিনি। গত বছর এই গাছ থেকে ২৬ হাজার টাকার ফল বিক্রি করেছি। এ বছর এর চেয়ে বেশি টাকার ফল বিক্রি হবে বলে আশা করছি।

রাঙামাটির কবি ও লেখক সুগত চাকমা বলেন, ‘আগাজা গুলো খুবই সুস্বাদু একটি সবজি। প্রতিবছর এ সময়ে আগ্রহে থাকি, বাজারে কবে পাওয়া যাবে। পাহাড়িরা শত বছর ধরে সবজি হিসেবে খেয়ে আসছে। একসময় পার্বত্য চট্টগ্রামে নিবিড় বন ছিল। এখন বন নেই। তাই এই গাছও সব জায়গায় হয় না।’

পিপলসনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --


CONTACT

ads@peoplenewsbd.com

দুই পুত্রবধূকে সঙ্গে নিয়ে দেশে ফিরেছেন খালেদা জিয়া দুই পুত্রবধূকে সঙ্গে নিয়ে দেশে ফিরেছেন খালেদা জিয়া খালেদা জিয়ার ফিরে আসা গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সহজ করবে: মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার ফিরে আসা গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সহজ করবে: মির্জা ফখরুল গাজা দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করলো ইসরায়েল গাজা দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করলো ইসরায়েল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরসহ সড়কে নেতাকর্মীদের ঢল খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরসহ সড়কে নেতাকর্মীদের ঢল