weather ৩২.৯৯ o সে. আদ্রতা ৬৬% , সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ডব্লিউএফপির গবেষণা

বিশ্বে খাদ্যে শতভাগ স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ গায়ানা

প্রকাশ : ২৬-০৫-২০২৫ ১১:৫১

ছবি : সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিশ্বে বর্তমানে একমাত্র দেশ হিসেবে খাদ্যে সম্পূর্ণ স্বয়ংসম্পূর্ণতার স্বীকৃতি পেয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার ছোট্ট দেশ গায়ানা। সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি) পরিচালিত এক গবেষণায় এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণাটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী ‘নেচার ফুড’-এ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, বিশ্বের ১৮৬টি দেশের মধ্যে গায়ানাই একমাত্র দেশ, যে তার জনগণের খাদ্য চাহিদা পূরণে শতভাগ সক্ষমতা অর্জন করেছে।

দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত গায়ানার উত্তরে আটলান্টিক মহাসাগর, পূর্বে সুরিনাম, দক্ষিণে ব্রাজিল ও পশ্চিমে ভেনেজুয়েলা। মাত্র আট লাখের কিছু বেশি জনসংখ্যার এই দেশটি বিস্তীর্ণ কৃষিজমি, উর্বর মাটি, অনুকূল জলবায়ু ও প্রচুর বৃষ্টিপাতের সুবিধা কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। ফলে, বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভরতা ছাড়াই দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে সক্ষম হয়েছে।

গবেষণাটিতে সাতটি প্রধান খাদ্য উপাদানের ভিত্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- ১. ফলমূল, ২. সবজি, ৩. মাছ, ৪. মাংস, ৫. দুগ্ধজাত পণ্য, ৬. উদ্ভিজ্জ প্রোটিন এবং ৭. শর্করার উৎস। 

গায়ানা এই সাতটির প্রতিটিতেই নিজস্ব উৎপাদনের মাধ্যমে শতভাগ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে; যা অন্য কোনো দেশ অর্জন করতে পারেনি।

এই গবেষণা পরিচালনা করেন জার্মানির গটিনজেন বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্যের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তারা বিভিন্ন দেশের খাদ্য উৎপাদন ও নাগরিকদের পুষ্টির চাহিদা মূল্যায়ন করেন ‘লাইভওয়েল ডায়েট’ নামক একটি বৈজ্ঞানিক মানদণ্ড অনুযায়ী।

গবেষণায় দেখা যায়, বিশ্বের প্রায় ৬৫ শতাংশ দেশ পর্যাপ্ত পরিমাণে মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হলেও সবজি, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন এবং শর্করার ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, সবজি উৎপাদনে মাত্র ২৪ শতাংশ দেশ প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারে, যা উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ও শর্করার ক্ষেত্রে আরো কম।

গায়ানার পরেই রয়েছে চীন ও ভিয়েতনাম— এই দুটি দেশ সাতটির মধ্যে ছয়টি খাদ্য উপাদানে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। তবে গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, বিশ্বে প্রতি সাতটি দেশের মধ্যে মাত্র একটি দেশ পাঁচটির বেশি খাদ্য উপাদানে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছে।

অন্যদিকে, ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু দেশ তুলনামূলকভাবে খাদ্যে বেশি স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও, ছোট দ্বীপরাষ্ট্র, আরব উপদ্বীপের দেশসমূহ এবং নিম্ন আয়ের বহু দেশ এখনো খাদ্য আমদানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, ম্যাকাও, কাতার ও ইয়েমেন— এই দেশগুলো কোনো একটি খাদ্য উপাদানেও স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।

গবেষণার অন্যতম গবেষক ড. স্টেহলে সতর্ক করে বলেন, একটি দেশ যদি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না হয়, তবে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থায় যেকোনো ধাক্কা— যেমন যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা— তাদের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ-এর পর এই বাস্তবতা আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যেখানে আমদানিনির্ভর দেশগুলো খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় পড়েছে।

বর্তমানে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা শুধু খাদ্যনীতির বিষয় নয়, বরং বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ড. স্টেহলের মতে, জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উত্থান, বৈদেশিক নির্ভরতা কমানোর প্রবণতা এবং জনস্বাস্থ্যের নিশ্চয়তার প্রয়োজনে একটি টেকসই ও স্থিতিশীল খাদ্য সরবরাহব্যবস্থা গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।

পিপলসনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --


CONTACT

ads@peoplenewsbd.com

পতেঙ্গায় ভেসে এলো দুই জেলের মরদেহ, এখনো নিখোঁজ ৬ জন পতেঙ্গায় ভেসে এলো দুই জেলের মরদেহ, এখনো নিখোঁজ ৬ জন দেশে নতুন ভোটার ৪৫ লাখ, বাদ যাচ্ছে ২১ লাখ দেশে নতুন ভোটার ৪৫ লাখ, বাদ যাচ্ছে ২১ লাখ চট্টগ্রাম বন্দরে ব্রাজিল থেকে আসা কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা চট্টগ্রাম বন্দরে ব্রাজিল থেকে আসা কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না সেই আনিসা পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না সেই আনিসা ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশের জন্য কেনা হবে ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশের জন্য কেনা হবে ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা