মর্যাদাপূর্ণ হায়দারের নামে, যুদ্ধ শুরু হলো : আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি
প্রকাশ : ১৮-০৬-২০২৫ ১২:০৩

ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, ইরান কখনোই জায়নবাদীদের (ইসরায়েল) সঙ্গে আপস করবে না। তিনি বলেন, মর্যাদাপূর্ণ হায়দারের নামে, যুদ্ধ শুরু হলো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া একাধিক পোস্টে তিনি এসব মন্তব্য করেন বলে বুধবার (১৮ জুন) বিবিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) এক পোস্ট খামেনি লিখেছেন, আমরা জায়নবাদীদের প্রতি কোনো দয়া দেখাব না। আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, মর্যাদাপূর্ণ হায়দারের নামে, যুদ্ধ শুরু হলো।
হজরত আলীর (রা.) আরেক নাম হায়দার— তিনি ইসলামের চতুর্থ খলিফা এবং শিয়া মুসলমানদের কাছে বিশেষভাবে সম্মানিত। মহানবী হজরত মুহাম্মদের সা.) চাচাতো ভাই ও মেয়ের জামাই হজরত আলী (রা.)।
খামেনির মন্তব্যগুলো তার একাধিক ভাষায় পরিচালিত এক্স অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প খামেনিকে নিয়ে মন্তব্য করার পর এটি ছিল তার প্রথম প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়া। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র জানে খামেনি কোথায় আছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে তাকে হত্যা করবে না। ইরানের আকাশসীমার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
মঙ্গলবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি বিবৃতি দিয়েছেন ট্রাম্প। এতে তিনি কোথায় খামেনি লুকিয়ে রয়েছেন তা শনাক্ত করার দাবি করেছেন। ট্রাম্প লিখেছেন, তিনি একটি সহজ লক্ষ্যবস্তু, কিন্তু সেখানে নিরাপদে আছেন- আমরা তাকে হত্যা করছি না, অন্তত এখন নয়।
পোস্টে তিনি আরো উল্লেখ করেন, আমরা চাই না ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বেসামরিক নাগরিক বা আমেরিকান সৈন্যদের ওপর হামলা হোক। এরপর তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমাদের ধৈর্য কমে আসছে।
অন্য একটি পোস্টে ট্রাম্প বড় হাতের অক্ষরে লিখেছেন, ‘শর্তহীন আত্মসমর্পণ!’ এটি তার আগের মন্তব্যের প্রতিধ্বনি, যেখানে তিনি ইরানের কাছে ‘পূর্ণ আত্মসমর্পণ’ দাবি করেছিলেন। তবে এ বিষয়ে ইরানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ট্রাম্প আরো দাবি করেন, ইরানের আকাশে আমরা এখন পূর্ণ ও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছি। মার্কিন বাহিনী এই সংঘাতে সরাসরি জড়িত থাকার কথা ঘোষণা করেনি। ফলে তিনি তার বিবৃতিতে ‘আমরা’ বলতে কাদের বোঝাচ্ছেন, তা স্পষ্ট নয়।
ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন, ইরানের কাছে ভালো আকাশ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ছিল। এগুলো পরিমাণেও প্রচুর। কিন্তু আমেরিকান তৈরি, পরিকল্পিত ও উৎপাদিত সরঞ্জামের সঙ্গে এর তুলনা হয় না। আমেরিকার চেয়ে ভালো কেউ এটি করতে পারে না।
এর আগে চলতি সপ্তাহেই খবর প্রকাশিত হয়, ইসরায়েলের খামেনিকে হত্যার প্রস্তাবে না বলেছেন ট্রাম্প।
এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ‘যুদ্ধ শুরু’র ঘোষণা এবং ইসরায়েলিদের প্রতি ‘কোনো দয়া না দেখানোর’ আহ্বান জানানোর পরপরই ইসরায়েলে দুই দফায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। মঙ্গলবার মধ্যরাতে এবং বুধবার ভোরে সেসব হামলায় ইসরায়েলে ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
দ্য টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, রাত ১২টা ৪০ মিনিটের কিছুক্ষণ পরেই ইসরায়েলের বিশাল অংশজুড়ে রকেটের সাইরেন বাজতে শুরু করে। এ সময় প্রায় ১৫টি প্রজেক্টাইল আঘাত হানে। এর প্রায় ৪০ মিনিট পরে প্রায় ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশ ছুঁয়ে আসার মাধ্যমে পরবর্তী আক্রমণ শুরু হয়।
হামলার কয়েক মিনিট আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে বাসিন্দাদের সতর্ক করে এবং আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেয়। প্রতিটি আক্রমণের পর আইডিএফ ইসরায়েলিদের জানিয়ে দেয়, বোমা আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ছেড়ে যাওয়া এখন নিরাপদ।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার স্থানে উদ্ধারকারী দল পৌঁছেছে। তবে আরো হামলার আশঙ্কায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com