weather ২৫.৯৯ o সে. আদ্রতা ৯৪% , মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শুল্কের কথা জানিয়ে ড. ইউনূসকে চিঠিতে যা লিখেছেন ট্রাম্প

প্রকাশ : ০৮-০৭-২০২৫ ১১:৩১

ছবি : সংগৃহীত

পিপলসনিউজ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার (৭ জুলাই) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে ট্রাম্প এ তথ্য জানান। ট্রাম্প দাবি করেন, মার্কিন পণ্যে বাংলাদেশের বাড়তি শুল্ক, অ-শুল্ক নীতি ও বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতার জন্য তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে বাংলাদেশ যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে থাকা এসব বাণিজ্য বাধা দূর করে এবং কার্যকর ব্যবস্থা নেয় তাহলে শুল্ক কমানো যেতে পারে। আবার বিপরীত হলে শুল্ক বাড়তেও পারে। 

বলা প্রয়োজন, বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের অন্যতম বাজার যুক্তরাষ্ট্র। গত এপ্রিলে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তখন আগ্রাসী এই শুল্ক হার কার্যকর করার আগে সময় দেওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি লিখেছিলেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এরপর বাড়তি এই শুল্ক কার্যকরের আগে তিন মাস সময় দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিয়ে দেশটির সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে শুধু যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টিও কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ট্রাম্পের ওই তিন মাসের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে সোমবার তা বাড়িয়ে ১ আগস্ট পর্যন্ত করেছেন তিনি। একইসঙ্গে ১৪টি দেশের সরকার প্রধানদের কাছে এদিন চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি নিরসনের বিষয়ে সমাধান না এলে ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে বর্ধিত হারে শুল্ক দিতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন  ট্রাম্প।  এর একটি চিঠি তিনি পাঠিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। চিঠিগুলো নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। প্রধান উপদেষ্টাকে লেখা ট্রাম্পের চিঠি হুবহু বাংলা অনুবাদ করে প্রকাশ করা হলো-

দ্য হোয়াইট হাউস
ওয়াশিংটন
জুলাই ৭, ২০২৫
মাননীয়
মুহাম্মদ ইউনূস
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকা
প্রিয় জনাব ইউনূস,
আপনাকে এই চিঠি পাঠানো আমার জন্য অনেক সম্মানের, যাতে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্কের দৃঢ়তা ও অঙ্গীকারের প্রতিফলন রয়েছে। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে, যদিও আপনার মহান দেশের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। তথাপি, আমরা আপনার সঙ্গে সামনে এগিয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তবে তা হবে আরো ভারসাম্যপূর্ণ ও ন্যায্য বাণিজ্যের ভিত্তিতে। সে কারণে আমরা আপনাকে বিশ্বের এক নম্বর বাজার যুক্তরাষ্ট্রের অসাধারণ অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে অনেক বছর আলোচনা করেছি এবং এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, বাংলাদেশের শুল্ক ও অশুল্ক, নীতিসমূহ এবং বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতার কারণে যে দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা থেকে আমাদের অবশ্যই সরে আসতে হবে। দুঃখজনকভাবে, আমাদের সম্পর্ক একে অপরের সমকক্ষ থেকে অনেক দূরে। ২০২৫ সালের ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো বাংলাদেশের যে কোনো ও সব ধরনের পণ্যের ওপর আমরা মাত্র ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব। এই শুল্ক সব খাতভিত্তিক শুল্কের অতিরিক্ত হিসেবে প্রযোজ্য হবে। উচ্চ শুল্ক এড়ানোর উদ্দেশ্যে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে পণ্য পাঠানো হলে সেগুলোর ওপরও সেই উচ্চ শুল্ক আরোপ হবে। অনুগ্রহ করে এটা অনুধাবন করেন যে, ৩৫ শতাংশ সংখ্যাটি আপনার দেশের সঙ্গে আমাদের যে বাণিজ্য ঘাটতি বৈষম্য রয়েছে, তা দূর করার জন্য যা প্রয়োজন তার থেকে অনেক কম। আপনি অবগত যে, যদি বাংলাদেশ বা আপনার দেশের বিভিন্ন কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য উৎপাদন বা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে কোনো শুল্ক আরোপ করা হবে না। বস্তুত আমরা সম্ভাব্য সব কিছু করব যাতে দ্রুত, পেশাদারত্বের সঙ্গে ও নিয়মিতভাবে অনুমোদন পাওয়া যায়, অন্যভাবে বললে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

যদি কোনো কারণে আপনি আপনার শুল্ক বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন আপনি যে পরিমাণ শুল্ক বাড়াবেন, তা আমাদের আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্কের ওপর যোগ করা হবে। অনুগ্রহ করে এটা উপলব্ধি করুন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি, যেটা স্থায়ী হওয়ার নয়, সেটা তৈরির পেছনে ভূমিকা রাখা বাংলাদেশের অনেক বছরের শুল্ক ও অশুল্ক নীতিসমূহ এবং বাণিজ্য বাধা সংশোধন করার লক্ষ্যে এসব শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এই ঘাটতি আমাদের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুতর হুমকি এবং সত্যিকার অর্থে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও বড় হুমকি!

আপনার বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে আমরা আগামী বছরগুলোতে আপনার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। আপনি যদি এখন পর্যন্ত বন্ধ রাখা আপনার বাণিজ্য বাজার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উন্মুক্ত করতে চান এবং শুল্ক, অশুল্ক নীতি ও বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা দূর করেন তাহলে আমরা সম্ভবত এই চিঠির কিছু অংশ পুনর্বিবেচনা করতে পারি। এই শুল্কহার আপনার দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে বাড়ানো বা কমানো হতে পারে। আপনি কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হতাশ হবেন না।
এই বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

শুভ কামনাসহ, আমি
বিনীত,
ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প। 

পিপলসনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --


CONTACT

ads@peoplenewsbd.com

মুরাদনগরে মা ও ছেলে-মেয়েকে হত্যার মামলা ডিবিতে স্থানান্তর মুরাদনগরে মা ও ছেলে-মেয়েকে হত্যার মামলা ডিবিতে স্থানান্তর আকুর দায় শোধের পর রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে আকুর দায় শোধের পর রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে মারধর ও অ্যাসিড নিক্ষেপের অভিযোগে ডিপজলের বিরুদ্ধে নারীর মামলা মারধর ও অ্যাসিড নিক্ষেপের অভিযোগে ডিপজলের বিরুদ্ধে নারীর মামলা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ বিষয়ে আলোচনা বুধবার : বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ বিষয়ে আলোচনা বুধবার : বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির ফরিদা পারভীনের মৃত্যুর গুজব, দোয়া চাইলেন স্বামী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুর গুজব, দোয়া চাইলেন স্বামী