weather ২৯.৯৯ o সে. আদ্রতা ৭৪% , রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ

সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আজও বিক্ষোভ

প্রকাশ : ২৫-০৫-২০২৫ ১৩:৪২

ছবি : সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদনের প্রতিবাদে সচিবালয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো বড় পরিসরে বিক্ষোভ করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রবিবার (২৫ মে) সকাল থেকে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ব্যানারে শত শত কর্মচারী দপ্তর ছেড়ে নিচে নেমে মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন।

বিক্ষোভে তারা অধ্যাদেশটিকে ‘নিবর্তনমূলক’ ও ‘কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান। মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে- ‘অবৈধ কালো আইন মানব না’, ‘নতুন অধ্যাদেশ বাতিল করো’ ইত্যাদি।

গত বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ সংশোধন করে নতুন ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এই খসড়ায় ১৯৭৯ সালের ‘সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ’-এর কিছু বিতর্কিত ধারা সংযোজন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রস্তাবিত এই ধারাগুলোর আওতায় সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত ছাড়াই বরখাস্ত, অব্যাহতি বা পদাবনতি দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনো কর্মচারী যদি এমন কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন যা অন্যদের মধ্যে অনানুগত্য বা শৃঙ্খলাবিরোধী মনোভাব সৃষ্টি করে, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। 

এছাড়া কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকা, অন্যকে কাজে না আসতে উস্কানি দেওয়া, দায়িত্ব পালনে অনীহা দেখানো ইত্যাদিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এই অপরাধের জন্য তিন ধরনের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে : বরখাস্ত, অব্যাহতি এবং পদাবনতি বা বেতন হ্রাস। 

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবির বলেন, ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনে প্রয়োজনীয় আচরণবিধি রয়েছে। সেখানে নতুন করে নিবর্তনমূলক ধারা সংযোজন অর্থহীন ও অগণতান্ত্রিক।

সংগঠনের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম এবং মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ জানান, ১৯৭৯ সালের বিধান সংযোজন করা হলে তা হবে সংবিধানের ১৩৫(২) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। 

তারা আরো অভিযোগ করেন, সংশোধনীটি পাসের আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। গোপনে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ থেকে ভেটিং করিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে।

আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই অধ্যাদেশ জারি হলে কর্মচারীদের মতপ্রকাশ ও বিবেকের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে। এতে ক্ষমতার অপব্যবহার বাড়বে এবং নানা অজুহাতে অসন্তোষের শিকার কর্মচারীরা হয়রানির মুখে পড়বেন। 

সংগঠনের সমন্বয়ক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এটি একটি ভয়ংকর প্রস্তাবনা; যা সরকারি কর্মপরিবেশকে বিষাক্ত করে তুলবে। আমরা দাবি করছি, অবিলম্বে এই অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের ভেটিং সাপেক্ষে অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর এটি অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর হবে।’ তবে বিজ্ঞপ্তিতে খসড়ার নির্দিষ্ট কোনো ধারা বা পরিবর্তনের বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য মতে, কিছু কর্মচারীর দায়িত্বে গাফিলতি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে সরকার বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। তাই আইন শৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৩ সালে 'কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকরকরণ আইন' জারির মাধ্যমে ১৯৭৯ সালের অধ্যাদেশটি কার্যকর ছিল। তবে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের পর তা আর বলবৎ ছিল না। এখন সেটিকে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’-এর সঙ্গে যুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। 

কর্মচারী সংগঠনগুলোর অভিযোগ, এতে করে প্রশাসনে এক ধরনের ভয়ভীতির পরিবেশ তৈরি হবে এবং স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ ক্ষুণ্ন হবে।

পিপলসনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --


CONTACT

ads@peoplenewsbd.com

শেখ হাসিনাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ শেখ হাসিনাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ে ১৯ প্রাণহানি পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ে ১৯ প্রাণহানি সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আজও বিক্ষোভ সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আজও বিক্ষোভ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২ যুবক আহত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২ যুবক আহত ফারুকীর সংবাদ সম্মেলন স্থগিতের ব্যাখ্যায় যা বললো বাংলা একাডেমি ফারুকীর সংবাদ সম্মেলন স্থগিতের ব্যাখ্যায় যা বললো বাংলা একাডেমি