সবাইকে তেহরান ত্যাগ করতে হবে: ডোনাল্ড ট্রাম্প
প্রকাশ : ১৭-০৬-২০২৫ ০৮:৪২

ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ করে তেহরান খালি করার আহ্বান জানিয়ে নতুন করে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের জন্ম দিয়েছেন। ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে তেহরানবাসীকে অবিলম্বে শহর ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানান, যদিও তিনি এ ঘোষণার নির্দিষ্ট কোনো কারণ ব্যাখ্যা করেননি।
এই ঘোষণার পরপরই ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ, আঞ্চলিক কূটনৈতিক তৎপরতা এবং ট্রাম্পের সম্ভাব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে। ইসরায়েলের ধারাবাহিক বিমান হামলার জবাবে ইরান শক্ত প্রতিরোধ দেখিয়েছে; যা এই সংঘাতকে আরো বিস্তৃত ও বিপজ্জনক করে তুলছে। এমন প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি কেবল বিতর্কই নয়, বরং পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানিদের অবিলম্বে তেহরান খালি করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সোমবার (১৬ জুন) তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে এ হুঁশিয়ারি দেন।
সিএনএন জানায়, নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেন, সবাইকে এখনই তেহরান ত্যাগ করতে হবে।
ওই পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরান আমার প্রস্তাবিত চুক্তি মেনে নিলে আজকের প্রাণহানি এড়ানো যেত। এটি দুঃখজনক ও অনর্থক প্রাণহানি। পরিষ্কার করে বলছি— ইরান পারমাণবিক অস্ত্র গ্রহণ করতে পারে না। আমি বারবার এটি বলেছি!’
এদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাত বন্ধে পদক্ষেপ নিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইরান। তেহরান বলেছে, ইসরায়েলের ওপর যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ প্রয়োগ করাই সংঘাত বন্ধের একমাত্র উপায়। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তার দেশ এখন ‘বিজয়ের পথে’ রয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনী ইরানের শহরগুলোতে বিমান থেকে বোমা হামলা আরো জোরদার করেছে। পাল্টা জবাবে ইরানও শক্তি প্রদর্শন করেছে। সংঘাতে এখন পর্যন্ত দেশটির সবচেয়ে বেশি সফলতা হলো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করা।
সোমবার এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি সত্যিই কূটনৈতিকভাবে সমাধানে আগ্রহী হন এবং এই যুদ্ধ থামাতে চান, তাহলে তার পরবর্তী পদক্ষেপগুলো সে অনুযায়ী হবে।’
আব্বাস আরাগচি আরো বলেন, ‘ইসরায়েলের অবশ্যই আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে এবং আমাদের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা পুরোপুরি বন্ধ না হলে পাল্টা জবাব অব্যাহত থাকবে। ওয়াশিংটন থেকে একটি ফোনকলই নেতানিয়াহুর মতো কাউকে থামাতে পারে। আর সেটি কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুলে দিতে পারে।’
একাধিক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, তেহরানের পক্ষ থেকে কাতার, সৌদি আরব ও ওমানকে অনুরোধ করা হয়েছে— তারা যেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, যাতে তিনি ইসরায়েলের ওপর তার প্রভাব খাটিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে উদ্যোগী হন। বিনিময়ে ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সমঝোতা আলোচনায় নমনীয়তা দেখাবে। দুজন ইরানি এবং ওই অঞ্চলের তিনটি কূটনৈতিক সূত্র রয়টার্সকে এ কথাগুলো বলেছে।
ইসরায়েলের একটি বিমানঘাঁটিতে সেনাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস এবং তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা— এই দুই প্রধান লক্ষ্য অর্জনের পথে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা বিজয়ের পথে আছি। তেহরানের নাগরিকদের বলছি, সরে যান, আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com