কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লার জন্মদিন আজ
প্রকাশ : ১৭-১১-২০২৫ ১৩:৫২
ছবি : সংগৃহীত
বিনোদন ডেস্ক
উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী রুনা লায়লার জন্মদিন আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর)। জীবনের ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন তিনি। বরাবরের মতো এবারের দিনটিও তিনি উদযাপন করবেন ঘরোয়া আয়োজনে, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশেষ কোনো বর্ণাঢ্য আয়োজন থাকছে না বলেও জানিয়েছেন এ গুণী শিল্পী।
তার গাওয়া জনপ্রিয় গান ‘দামা দাম মাস্ত কালান্দার’ নতুন করে কণ্ঠায়িত হয়েছে কোক স্টুডিও বাংলার জন্য। রবিবার কোক স্টুডিও বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে গানটি। তৃতীয় সিজনের ঘোষণা আসার পর থেকেই আলোচনা ছিল যে, এ সিজনে গান করছেন রুনা লায়লা। টিজার প্রকাশের পর অবশেষে পুরো গানটি প্রকাশ পায় ১৪ নভেম্বর।
এদিকে জন্মদিন উপলক্ষে আজ প্রকাশিত হচ্ছে তাকে নিয়ে লেখা উপন্যাস ‘মায়ার সিংহাসন’। আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদিরের লেখা এ গ্রন্থে উঠে এসেছে বাংলাদেশের জনসংস্কৃতিতে রুনা লায়লার আবির্ভাব, সংগ্রাম ও কিংবদন্তি হয়ে ওঠার গল্প। বইটি প্রকাশ করছে চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন।
জন্মদিন প্রসঙ্গে রুনা লায়লা বলেন, ‘এখন পরিবারের সঙ্গেই দিনটি কাটে। ছোটবেলার জন্মদিনগুলোই বেশি মনে পড়ে- মা নতুন জামা বানিয়ে দিতেন, রান্না করতেন নানা মজার খাবার। সংগীতজীবনে এতদূর আসতে বাবা-মা, বড় বোন দীনা লায়লা ও পরিবারের সবার অসাধারণ সহযোগিতা পেয়েছি।
হাজারো গান করেছি- প্রতিটি গানই ছিল চ্যালেঞ্জিং, প্রতিবারই নতুন কিছু শেখার সুযোগ হয়েছে। আজও সেই চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। মানুষের অগাধ ভালোবাসাই আমাকে এতদূর নিয়ে এসেছে।’ ১৯৫২ সালের আজকের দিনে তার জন্ম সিলেটে। জন্ম এখানে হলেও বাবার কর্মসূত্রে তার শৈশব কেটেছে পাকিস্তানের লাহোরে।
সংগীতশিল্পী মায়ের কাছে শিখেছেন সংগীতের প্রাথমিক ব্যাকরণ। এরপর করাচির সংগীতজ্ঞ আব্দুল কাদের পিয়ারাঙ্গ ও হাবীব উদ্দিন খানের কাছে তালিম নেন। মাত্র ছয় বছর বয়সে গান শুরু করেন রুনা লায়লা। এরপর মাত্র সাড়ে ১১ বছর বয়সে পাকিস্তানের ‘জুগনু’ ছবির মাধ্যমে প্লেব্যাকের খাতায় নাম লেখান তিনি। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্লেব্যাক করেন পাকিস্তানের অনেক ছবিতে।
১৯৭৪ সালে ‘এক ছে বারকার এক’ ছবির মধ্য দিয়ে ভারতীয় চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শুরু হয় তার। একই বছরে স্বাধীন বাংলাদেশে ‘স্বরলিপি’ ছবির মধ্য দিয়ে প্রথম বাংলা চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেন তিনি। এরপর বাংলাদেশের বিভিন্ন ছবিতে একের পর এক সুপারহিট গান উপহার দিতে থাকেন তিনি।
বাংলা, হিন্দি, উর্দু গানে নিজেকে অন্যরকম উচ্চতায় নিয়ে যান। ‘দামা দাম মাস্ত কালান্দার’ গানটি রুনা লায়লাকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়। এ গানটি পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশেরই গানপাগল শ্রোতাদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার গাওয়া গজল গানও উপমহাদেশের শ্রোতাদের কাছে সেই সময়েই গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে।
বাংলা, হিন্দি ও উর্দু ছাড়াও গুজরাটি, পাঞ্জাবি, সিন্ধি, পশতু, বেলুচ, আরবি, পারসিয়ান, মালয়, নেপালি, জাপানি, ইতালীয়, স্প্যানিশ, ফরাসি ও ইংরেজিসহ ১৮টি ভাষার গান তার কণ্ঠে প্রাণ পেয়েছে।
তার গাওয়া অসম্ভব জনপ্রিয় কিছু গানের মধ্যে রয়েছে দামা দাম মাস্ত কালান্দার, শিল্পী আমি তোমাদেরই গান শোনাব, পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিলাম, যখন থামবে কোলাহল, এই বৃষ্টি ভেজা রাতে চলে যেও না, বন্ধু তিন দিন তোর বাড়িত গেলাম, যখন আমি থাকবো না গো আমায় রেখো মনেসহ অসংখ্য গান।
ক্যারিয়ারজুড়ে পেয়েছেন নানা পুরস্কার। এসবের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ থেকে ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার। এ ড়া ভারত থেকে পেয়েছেন সায়গল পুরস্কার। পাকিস্তান থেকে অর্জন করেছেন নিগার, ক্রিটিক্স, গ্র্যাজুয়েটস পুরস্কারসহ জাতীয় সংগীত পরিষদ স্বর্ণপদক।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com