রাজধানীর বাজারে সবজি ও মুরগির দামে স্বস্তি
প্রকাশ : ২৩-০৫-২০২৫ ১২:১৫

ছবি : সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সবজির বাজারে স্বস্তি বিরাজ করছে। কয়েকটি সবজি ছাড়া অন্যগুলোর দাম প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারে মুরগির দামও বেশ কম। সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত আছে ডিমের দামও। অন্য মুদি পণ্যগুলোর দামও স্থিতিশীল। শুক্রবার (২৩ মে) সকালে রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে বেশিরভাগ সবজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পটোল, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গা ও কাঁকরোল আছে এই তালিকায়। এ ছাড়া বরবটি, কচুর লতি, উস্তা, বেগুন, ঝিঙে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।
এদিকে, বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম নেমেছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। কিছু বাজারে দাম ১৭০ টাকা হাঁকলেও দরদাম করলে ওই দামে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে; যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ২০ টাকা কম। একইভাবে কমে সোনালী মুরগি প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির দাম কম থাকলেও ডিমের দাম মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১০ টাকা বেড়ে ১৪০-১৪৫ টাকা হয়েছে। এখনো সে দামেই পাওয়া যাচ্ছে। নতুন করে দামের কোনো হেরফের হয়নি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় বাজারগুলোতে এখন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা ডজন দরে। পাড়া-মহল্লায় এক ডজন ডিম ১৪৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। পুরোনো মিনিকেট চাল বাড়তি দামে বিক্রি হলেও কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে বাজারে নতুন আসা মিনিকেট।
দেখা গেছে, পুরোনো মিনিকেট চাল যেখানে সর্বনিম্ন ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে নতুন মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। তবে ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পুরোনো মিনিকেট চাল এখনো সর্বোচ্চ ৮৫-৮৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
অন্যদিকে মুদি বাজারে তেল চিনি ডালের দামে খুব একটা পার্থক্য দেখা যায়নি। তবে মাছের বাজারে চড়াভাব দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে চাষের মাছের সরবরাহ কিছুটা কম।
বাজারে প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে। এ ছাড়া কই, শিং, শোল, ট্যাংরা ও পুঁটির দাম বাড়তি। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙাশও আগের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি চাষের রুই, কাতলা ৩২০-৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা ও পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মগবাজারের সবজি বিক্রেতা মিলন মিয়া বলেন, বাজারে গ্রীষ্মের সবজির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে, যে কারণে দাম অনেকটা কম। অনেক এলাকায় বন্যার শঙ্কার কারণে অনেকে ক্ষেতের সবজি তুলে ফেলছেন। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় প্রতিটি সবজির দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা করে কমেছে।
মালিবাগ বাজারে বেসরকারি চাকরিজীবী কামাল উদ্দিন বলেন, গত ঈদের পর থেকে যেমন সবজির দাম বাড়তি ছিল সেই তুলনায় সবজির বাজার কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া কিছুদিন আগে যেসব সবজি ৭০-৮০ টাকার ঘরে ছিল, সেই সবজিগুলো এখন ৫০-৬০ টাকার ঘরে নেমেছে। সেই হিসেবে সবজির দাম এখন কিছুটা কম।
মগবাজার বাজারের আরেক ক্রেতা শহীদুজ্জামান বলেন, আজকে বাজারে দেখলাম সবজির মধ্যে সবচেয়ে দামি সবজি কাঁকরোল, যার প্রতি কেজি ৮০ টাকা। এ ছাড়া টমেটোর দাম হঠাৎ করে বেড়ে এখন প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাকি সবজিগুলোর দাম তুলনামূলক কমেছে। সবজির দাম কমেছে বলতে যেটি প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হত সেটি আজকের বাজারে দেখলাম ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মহাখালী বাজারের সবজি বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে সবজির দাম কম যাচ্ছে। ক্রেতারা আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে সবজি কিনছে এখন। কিছুদিন আগেও সবজির দাম যখন বাড়তি যাচ্ছিল তখন ক্রেতারা খুব কম পরিমাণে সবজি কিনছিল। সেই তুলনায় সবজির দাম এখন কম হওয়ায় তুলনামূলক বেশি করে সবজি কিনতে পারছে। পাইকারি বাজারে যখন আমরা কম দামে সবজি কিনতে পারি, তখন কম দামে ক্রেতাদের কাছে সবজি বিক্রি করা যায়।
মালিবাগ বাজারে মুরগির বিক্রেতা খাইরুল আলম বলেন, বাজারে এতো সস্তা দামে মুরগি দীর্ঘদিন পরেই বিক্রি হচ্ছে। এখন মুরগি বিক্রি করে খামারিদের প্রচুর লোকসান হচ্ছে। দাম ২০০ টাকা কেজির কাছাকাছি থাকা ভালো।
কারওয়ানবাজারে পাইকারি ডিম বিক্রেতা রফিক মিয়া বলেন, বর্ষার এই সিজনে অন্য বছরগুলোতে ডিমের দাম আরো বেশি থাকে। সে হিসেবে এ বছর দীর্ঘদিন ধরে ডিমের দাম কম।
খিলগাঁও বাজারে চাল বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, নতুন চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে। এখন প্রতি বস্তা মিনিকেটের দাম দুই হাজার টাকার মধ্যে এসেছে; যা আগে দুই হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। তিনি বলেন, বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দামই কমেছে। তবে পুরোনো কোনো চালের দাম এখনো কমেনি।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com