শুধুমাত্র মে মাসে নৌকাডুবিতে ৪২৭ রোহিঙ্গার মৃত্যু: জাতিসংঘ
প্রকাশ : ২৪-০৫-২০২৫ ১২:৪৩

নিরাপদ জীবনের খোঁজে রোহিঙ্গাদের বিপদজনক নৌযাত্রা বাড়ছে। ছবি: ইউএনইচসিআর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমার ও বাংলাদেশে চলমান মানবিক সংকটের ফলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ নৌযাত্রার প্রবণতা বাড়ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।
সংস্থাটি জানিয়েছে, শুধুমাত্র মে মাসেই নৌকাডুবির ঘটনায় অন্তত ৪২৭ জন রোহিঙ্গার মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই মৃত্যু ২০২৫ সালের মধ্যে সবচেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গত ৯ ও ১০ মে দুইটি পৃথক নৌকাডুবির ঘটনায় ৫১৪ জন রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্য ও বাংলাদেশের কক্সবাজার শরণার্থী শিবির থেকে সমুদ্রপথে রওনা হয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে মাত্র ৮৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকিরা এখনো নিখোঁজ, যাদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে ইউএনএইচসিআর। এই পরিস্থিতিকে সংস্থাটি রোহিঙ্গাদের ‘মরিয়া ও বিপর্যস্ত’ অবস্থার প্রতিফলন হিসেবে বর্ণনা করেছে। বর্ষাকালে উত্তাল সমুদ্র ও ঝড়বৃষ্টির মধ্যে এই ধরনের নৌযাত্রা তাদের চরম ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
ইউএনএইচসিআর-এর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক ব্যুরোর পরিচালক হাই কিয়াং জুন বলেন, তহবিল সংকট রোহিঙ্গাদের জীবনকে আরও অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিচ্ছে। নিরাপদ, সম্মানজনক ও মানবিক জীবন যাপনের আশা থেকেই তারা বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রায় বাধ্য হচ্ছে।
২০২৫ সালের জন্য রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় ইউএনএইচসিআর মোট ৩৮৩.১ মিলিয়ন ডলার অনুরোধ করলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০ শতাংশ অর্থ পাওয়া গেছে। এতে করে অনেক জরুরি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া ও চীনের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়াচ্ছে, ফলে মানবিক সহায়তার তহবিল কমছে। এর প্রভাব সরাসরি পড়ছে রোহিঙ্গাদের মতো শরণার্থী গোষ্ঠীর ওপর।
২০২৪ সালে ইউএনএইচসিআর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুই বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান পেলেও চলতি বছর মার্চে সংস্থাটি ৩০০ মিলিয়ন ডলারের পূর্বপরিকল্পিত কর্মসূচি স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে।
ইউএনএইচসিআর আশ্রয়দাতা দেশগুলোতে রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নে এবং মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনটি সতর্ক করেছে, সহায়তা অব্যাহত না থাকলে এই সংকট আরো গভীর হবে, এবং রোহিঙ্গারা আরও বিপজ্জনক পথ বেছে নিতে বাধ্য হবে।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com